Domkal

নদীর মাটি কাটা হচ্ছে অবাধে

ভৈরব নদের পাড় দিয়ে শিবনগর গ্রামে যেতে গেলে উল্টো দিকে হরিহরপাড়া এলাকায় নদীর পাড়ের মাটি কেমন উধাও হয়েছে, তা চোখে পড়বে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:৫৭
Share:

কেটে ফেলা হয়েছে ভৈরব নদের মাটিও। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

বুধবারই রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের এক রেভিনিউ ইন্সপেক্টরকে বেধড়ক মারধর খেতে হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ডোমকলে ভৈরব নদীর পাড় থেকেও মাটি ও বালি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ‘মাটি মাফিয়া’দের বিরুদ্ধে। রঘুনাথগঞ্জের মতো এ ক্ষেত্রেও, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকাল পর্যন্ত সকলের চোখের সামনেই চলছে সেই কাজ। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে বিরোধীদের দাবি, গোটা ঘটনা চলছে পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের চোখের সামনে। সাধারণ মানুষ বলতে গেলেই তাদের উপরে খাঁড়া নেমে আসবে। তাদের দাবি, এর পিছনে এলাকার প্রভাবশালীরা জড়িয়ে রয়েছেন। যদিও শাসক দলের নেতারা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন সেই অভিযোগ। তাঁরাও বলছেন, প্রশাসনের কাছে তারা বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার দরবার করেছেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। ডোমকলের বিডিও শ্যামসুন্দর মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে নেই, তবে খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

ভৈরব নদের পাড় দিয়ে শিবনগর গ্রামে যেতে গেলে উল্টো দিকে হরিহরপাড়া এলাকায় নদীর পাড়ের মাটি কেমন উধাও হয়েছে, তা চোখে পড়বে। পাড় থেকে জেসিবি ব্যবহার করে খুবলে নেওয়া হয়েছে মাটি। কিন্তু দিন কয়েক আগে প্রশাসন উদ্যোগী হওয়ায় ওপারে মাটি চুরি বন্ধ হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। কিন্তু শিবনগর গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এপারের মাটি মাফিয়ারা থেমে নেই। প্রতিদিন একাধিক ট্রাক্টর নদের পাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে। যেহেতু নদের পাড় সরকারি খাস জায়গা ফলে স্থানীয় মানুষ তাদের কিছু বলতে পারেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলছেন, ‘‘বলতে গেলেই বিপদের সামনে পড়তে হবে আমাদের। ফলে সব দেখেও চুপচাপ থাকতে হচ্ছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘একটু বেশি বন্যা হলেই ভৈরব নদের জল গ্রামের ভেতরে ঢুকে যাবে। গোটা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়বে।’’

এলাকার ভগীরথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সানোয়ারা খাতুন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে আছে। আমরা প্রথমে বাধা দেওয়ায় এখন দিনের বদলে রাতের অন্ধকারে মাটি কাটা চলছে। পুলিশ প্রশাসন এগিয়ে না এলে আগামীতে বিপদের মুখে পড়তে হবে ভগীরথপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গ্রামকে।’’

Advertisement

ডোমকলের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, ‘‘মাটি মাফিয়ারা দীর্ঘদিন ধরেই ওই কাজ করছে ওই এলাকায়। এদের পিছনে আছে শাসক দলের শক্তি। ফলে এরা কাউকে কিছু পরোয়া করে না। প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে নদের পাড় রক্ষা করা হোক।’’ এলাকার তৃণমূল নেতা ও ভগীরথপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী তাপস মন্ডল বলছেন, ‘‘আমরা বারণ করলে কর্ণপাত করছে না মাটি মাফিয়ারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন