কুড়ুলের কোপ, গ্রেফতার জামাই

শুক্রবার রাতে শান্তিপুরের কলেজপাড়ার ঘটনা। শনিবার বিকেলে পুলিশ লক্ষ্মীতলার বাসিন্দা শ্রীমন্ত সান্যালকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১০ সালে কলেজপাড়ার বাসিন্দা চৈতালির সঙ্গে বিয়ে হয় শ্রীমন্তের।

Advertisement

বিশেষ সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

নাগাড়ে হুমকি দেওয়ার পরেও বধূ নির্যাতনের মামলা তুলে না নেওয়ায় রাতের অন্ধকারে শ্বশুর ও শাশুড়িকে কুড়ুল দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিলন চক্রবর্তী ও মমতা চক্রবর্তী কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

শুক্রবার রাতে শান্তিপুরের কলেজপাড়ার ঘটনা। শনিবার বিকেলে পুলিশ লক্ষ্মীতলার বাসিন্দা শ্রীমন্ত সান্যালকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১০ সালে কলেজপাড়ার বাসিন্দা চৈতালির সঙ্গে বিয়ে হয় শ্রীমন্তের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে তিনি স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বছর দেড়েক আগে চৈতালিদেবী বাপের বাড়িতে চলে আসেন। পুলিশের কাছে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগ, সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য শ্রীমন্ত নানা ভাবে শ্বশুরবাড়িতে চাপ দিতে শুরু করেন। এর আগেও তিনি শ্বশুরবাড়িতে এসে হামলা চালাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ কোনও লাভ না হওয়ায় শুক্রবার রাতে তিনি বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বশুর ও শাশুড়িকে কুড়ল দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন। ওই দম্পতির চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তার আগেই পালিয়ে যান শ্রীমন্ত।

Advertisement

রাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের প্রথমে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার সেখান থেকে তাদের স্থানান্তরিত করা কলকাতার হাসপাতালে। চৈতালিদেবীর বাবা মিলন চক্রবর্তীর শান্তিপুর কলেজের কাছেই একটি চায়ের দোকান আছে। এলাকায় তিনি নিরীহ ও ভাল মানুষ বলেই পরিচিত। চৈতালিদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ শ্রীমন্তকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে শ্রীমন্ত পালিয়ে নিজের বাড়িতেই ছিলেন। সেখান থেকে জামাকাপড়, টাকাপয়সা নিয়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তার আগেই অবশ্য খবর পেয়ে বাড়িতে হানা দেয় শান্তিপুর থানার পুলিশ। হাতেনাতে ধরে ফেলে তাঁকে।

অভিযুক্ত শ্রীমন্ত গ্যাসের সিলিন্ডার, ওভেন সারাইয়ের কাজ করেন। অভিযোগ, শ্রীমন্ত বেশ বদরাগী। নেশা করতেন। পণের টাকার জন্য তিনি স্ত্রীকে মারধরও করতেন। দিনের পর দিন এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন চৈতালি। তাঁর কথায়, “বিয়ের পর থেকেই অত্যাচার করত। এমনকী সিগারেটের ছ্যাঁকা থেকে শুরু করে পুড়িয়ে মারারও চেষ্টা করেছিল। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েছিলাম বাপের বাড়ি চলে আসতে।” চৈতালীদেবীর ভাই তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “দিদিকে মেরে পালাতে চেয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে যে বাবা-মাকেই কুপিয়ে খুন করতে চাইবে সেটা ভাবতে পারিনি। দু’জনের অবস্থাই খুবই খারাপ। জানি না কী হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন