Hasir Alo

হাসির আলো ২ লক্ষ ঘরে

‘হাসির আলো’ প্রকল্প এনে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলি নিখরচায় বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি

দুয়ারে পুরভোট। তার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে। এই অমোঘ-ক্ষণে ‘হাসির আলো’ প্রকল্প এনে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলি নিখরচায় বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

বিরোধীরা তা নিয়ে ‘ডোল পলিটিক্স’ বা পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির ধুয়ো তুললেও সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ওই প্রকল্পে মুর্শিদাবাদের ২ সক্ষেরও বেশি মানুষ এই উপকৃত হবেন।

রাজ্য বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, তিন মাসে যাঁদের বিদ্যুৎ খরচ ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত, তাঁদের পরিবারে হাসির আলো ফুটবে! ওই বাজেট-ঘোষণায় খুশির হাওয়া মুর্শিদাবাদের পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলিতে। লালগোলা থেকে জলঙ্গি বেশ কিছু পরিবারে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, ৬০ থেকে ৮০ ইউনিটে দিব্যি তিন মাস আলোকোজ্জ্বল হয়ে থাকছে ঘরদোর। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে প্রায় ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন। তার মধ্যে অন্তত ২ লক্ষ গ্রাহক ‘লাইফ লাইন কনজিউমার’ হিসেবে ওই প্রকল্পের আওতায় আসবেন। ওই গ্রাহকদের বর্তমানে ইউনিট পিছু ১৯ পয়সা ভর্তুকি দেয় রাজ্য সরকার। এ বারে তাঁরা বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ পাবেন।

Advertisement

তবে, বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর সমালোচনা, ‘‘সামনে ভোট বলেই কি এত দিনে, দিন আনতে পান্তা ফুরানো মানুষের কথা মনে পড়ল রাজ্য সরকারের! তবে, আমরা চাই অন্তত ১৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিখরচায় দেওয়া হোক।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান পাল্টা বলছেন, ‘‘আমরা ভোটের রাজনীতি করি না, এই প্রকল্পে মুর্শিদাবাদের অনেক দুঃস্থ মানুষ সুবিধা পাবেন তা পরিসংখ্যানই বলছে।’’ কিন্তু, মাত্র ৭৫ ইউনিট বিদ্যুতে তিন মাস চলা কী সম্ভব? বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অবশ্যই সম্ভব। মাসে ২৫ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হলে দৈনিক ১০ ঘণ্টা করে একটি ৬০ ওয়াটের পাখা এবং দৈনিক ১০ ঘণ্টা করে ২০ ওয়াটের আলো জ্বালানো যেতে পারে।’’

বাম আমলে দুঃস্থদের জন্য ‘লোকদীপ’ প্রকল্প চালু হয়েছিল। সে সময় বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষকে পাঁচ টাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া হত। পরবর্তী সময়ে সেই প্রকল্প উঠে গিয়ে ভর্তুকিতে বিদ্যুৎ দেওয়া শুরু হয়। ২০১৪ সালে বিজেপি ‘উজালা যোজনা’ নামে একটি প্রকল্প এনে কম দামে এলইডি আলো দিয়েছিল। কিন্তু সে সবই এখন অতীত। হাসির আলো নয়া সংযোজন।

বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা বলছেন, এখন আগের থেকে বিদ্যুতের ব্যবহারে বেড়েছে। এই মুহূর্তে যে সব পরিবারে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ হয় তাঁদের ভর্তুকিতে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের ইউনিট পিছু ১৯ পয়সা ভর্তুকির জেরে তাঁদের ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দাম দিতে হয় ৩ টাকা ৩৭ পয়সা। রাজ্য বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, এই ধরনের গ্রাহকেরা নিখরচায় বিদ্যুৎ পাবেন। বিদ্যুৎবন্টন দফতরের মুর্শিদাবাদের আঞ্চলিক অধিকর্তা সুশান্ত হাজরা বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ এলেই সেই অনুযায়ী বিদ্যুতের বিল দেওয়া করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন