গরমের ছুটি তো কী, অঙ্ক কষতে স্কুলে হাজির খুদেরা

দিন চারেক আগেই গরমের ছুটি পড়েছে। পড়ুয়ারা যে যার মতো বেড়িয়ে পড়েছে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। দিন কুড়ি ছুটিতে আপাতত স্থগিত প়ড়াশোনা।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

লালবাগ শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ০১:১১
Share:

ক্লাস: চলছে অঙ্কের ক্লাস। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

দিন চারেক আগেই গরমের ছুটি পড়েছে। পড়ুয়ারা যে যার মতো বেড়িয়ে পড়েছে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। দিন কুড়ি ছুটিতে আপাতত স্থগিত প়ড়াশোনা। কিন্তু এই ছুটির মরসুমেও ছাড় নেই লালবাগ বয়েজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের। তনবীর, শোভন, বিনীত, আসিফ, প্রেমকুমারেরা সকাল হতেই ছুটছে স্কুলে। উদ্দেশ্য, অঙ্ক কষা। ছুটি-বাতিল করে স্বেচ্ছায় শিক্ষকেরা আসছেন স্কুলে। চলছে খেলার ছলে অঙ্ক শেখানো।

Advertisement

কেন এমন ভাবনা? স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, গরম ছুটি মিটতে না মিটতেই জোড়া পরীক্ষা। ছুটির কয়েকদিন পরেই বৃত্তি পরীক্ষা। তা শেষ হতে না হতেই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির মরসুম এসে পড়বে। সিংহভাগ স্কুলই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা নেয়। সেই পরীক্ষায় যোগ্যতার সঙ্গে উতরোতে পারলেই মেলে পড়ার সুযোগ। ওই দুই পরীক্ষায় পড়ুয়ারা যাতে ভাল ভাবে উত্তীর্ণ হতে পারে, তার জন্যই এই বন্দোবস্ত। ছুটির মধ্যেই সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে দু’ঘন্টা মজার ছলে অঙ্ক শেখানোর বিশেষ ক্লাস করছে পড়ুয়ারা।

পড়ুয়াদের উৎসাহ দেখে খুশি শিক্ষক-অভিভাবকেরা। অভিভাবক নাফিসা আফরোজ, সুভাষ দাসদের কথায়, ‘‘গল্পের ছলে অঙ্ক করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। ফলে বাড়িতে অঙ্ক কষতে গিয়ে কোথাও ভুল-ভ্রান্তি হলে খেই ধরিয়ে দিতে পারছি।’’

Advertisement

ছুটিতেও অঙ্ক শেখানোর ভাবনাটা প্রথম মাথায় আসে প্রধান শিক্ষক শুভাশিস পালের। তিনি জানালেন, ৪০ মিনিটের ক্লাসে অঙ্কের সমস্ত খুঁটিনাটি ভাল করে শেখানো যায় না। ফলে অনেক সময়ই পড়ুয়ারা অঙ্ক ভীতিতে ভোগে। সেই ভয় তাড়াতে বিশেষ ক্লাস করানো হচ্ছে। এর ফলে পঞ্চম শ্রেণির ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষায় সুবিধা হবে। নতুন স্কুলের শিক্ষকরা ‘আগের স্কুল কিছুই অঙ্ক শেখায়নি’ জাতীয় কোনও কথা বলতে পারবে না। তাই ছুটিতেও ক্লাস চলছে।

শুধু বর্তমান শিক্ষকেরাই নন, ক্লাস নিচ্ছেন স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র তথা গুধিয়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক জনদীপ বিশ্বাস, টেগর প্রাথমিকের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সজল সেনগুপ্ত, আমডহরা প্রাথমিকের শিক্ষক অরুণ দে। সংখ্যা নিয়ে সহজে খেলার নিয়ম শেখাচ্ছেন তাঁরা। কেসি নাগ থেকে বিভিন্ন মডেল প্রশ্ন কী ভাবে সহজে সমাধান করা যায়, তাও শেখানো হচ্ছে। পাঁচজন করে ছাত্রকে নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে একেকটি দল। তারা একত্রে অঙ্ক কষছে। এর ফলে এক দল ছাত্রের সঙ্গে অপর দলের প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে। এ সব দেখে উচ্ছ্বসিত অভিভাবক রুকসানা বিবি বলেন, ‘‘এ সবের ফলে আমাদের ছেলেরা নিশ্চিত ভাবেই অন্য স্কুলের পড়ুয়াদের থেকে বেশি এগিয়ে থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন