চর-পড়ুয়া

নদী ডিঙিয়েই বড় পরীক্ষায়

বাধা রয়েছে পদে পদে। আর সেই হাজারও বাধা পেরিয়ে ওরা বসছে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৭
Share:

বাধা রয়েছে পদে পদে। আর সেই হাজারও বাধা পেরিয়ে ওরা বসছে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায়।

Advertisement

ওরা নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের চরের পড়ুয়া। হোগলবেড়িয়ার কাঁটাতারের ওপারের গ্রাম চর মেঘনা থেকে এ বার মাধ্যমিকে বসছে ১৩ জন পরীক্ষার্থী। মুর্শিদাবাদের রানিতলা চর এলাকায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০। জলঙ্গির চর পরাশপুর, উদয়নগর খণ্ড চর থেকেও এ বারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে ১৫ জন।

সম্বৎসর ওরা কী অসুবিধার মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যায় সে কথা জানেন স্কুলের শিক্ষকেরা। আখেরিগঞ্জ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলছেন, ‘‘চরে না আছে বিদ্যুৎ, না আছে রাস্তা। গৃহশিক্ষকও মেলে না। অভাব আর সীমান্তের নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই ওরা পড়াশোনা করে। শীতের সময় স্কুল ছুটির বেশ কিছুটা আগেই ওদের ছুটি দিয়ে দিতে হয়। কারণ, হেঁটে ওরা যখন বাড়ি পৌঁছয় ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে আসে।’’

Advertisement

চর পরাশপুর, উদয়নগরের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে যেতে হবে জলঙ্গি হাই স্কুলে। পরীক্ষার্থী ওয়াহিদ কবিরের কথায়, ‘‘চর থেকে পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে গেলে তবেই মিলবে রাজ্য সড়ক। সেখান থেকে গাড়ি ধরে আরও ৭ কিলোমিটার দূরে জলঙ্গি।’’ আর প্রতি বছরের মতো এ বারও মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতেই সাজ সাজ রব চরমেঘনায়। কারণ, হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের ওই ১৩ জন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যেন পরীক্ষায় বসছে গোটা গ্রামটাই। করিমপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা চর মেঘনার বাসিন্দা উত্তম সর্দার জানান, গ্রামের প্রায় দু’শো পরিবারের সকলেই দিনমজুর। সন্ধ্যার পরে কাঁটাতারের গায়ে লোহার গেট বন্ধ হয়ে গেলেই এ গ্রামের সঙ্গে গোটা দেশের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমন নানা অসুবিধার মধ্যেও এ গ্রামে শিক্ষিতের হার বেড়েছে। পরীক্ষার্থী চিন্ময় বিশ্বাস, শিপ্রা মণ্ডলদের কথায়, ‘‘এটা শুধু পরীক্ষা নয়, যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধে জিততেই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement