ওজন ঝরানোর যাত্রায় ভুল রয়ে যাচ্ছে না তো? ছবি: সংগৃহীত।
নতুন বছর আসন্ন। জীবনকে নতুন ভাবে দেখার, যাপনের নতুন পদ্ধতি আয়ত্ত করার প্রতিশ্রুতির সময় এটিই। বছরের শেষে অনেকেই রোগা হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন। কিন্তু ওজন কমানোর পন্থার বিষয়ে একটি বড়সড় ভুল সমূলে বিনাশের চেষ্টা করলেন চেন্নাইয়ের ফিটনেস প্রশিক্ষক রাজ গণপত। তিনি সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো করেছেন তাঁদের উদ্দেশে, যাঁরা নতুন বছরে ছিপছিপে হয়ে উঠতে চান। তাই বছরের শেষেই ভ্রান্ত ধারণাকে বিদায় দিয়ে নতুন কৌশল সম্পর্কে অবগত হতে বলছেন রাজ।
অনেকেই পরিকল্পনা করেছেন, ৩-৪ মাসের মধ্যেই দ্রুত ওজন কমিয়ে ফেলবেন। ধরা যাক, ১০ কেজি কমানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু আগে বহু বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা। রাজ বলছেন, তা হলে এই লক্ষ্য স্থির করার মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। প্রশিক্ষকের ভাষায়, ‘‘ওজন কমানোর বিষয়ে ধারণা পাল্টে ফেলতে হবে ২০২৬ সালে। ধরা যাক, আপনি ১০ কেজি ওজন ঝরাতে চান। ভাবছেন, আগামী ৩-৪ মাসের মধ্যে সেটি করে ফেলবেন। তার পর বছরের বাকি সময়টায় নিজের মতো থাকবেন। কিন্তু সমস্যা এখানেই।’’
পাকাপাকি ভাবে ওজন কমিয়ে ফেলার পন্থা। ছবি: সংগৃহীত।
এই ভাবনাই ওজন কমানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা প্রশিক্ষকের। কারণ, প্রথমত, অধিকাংশ মানুষই লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারেন না। তাঁদের ১০ কেজি ওজম কমে না ৩-৪ মাসে। খুব বেশি হলে ১০ শতাংশ মানুষ লক্ষ্যভেদ করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যদি আপনি প্রচুর চেষ্টা করে ৩-৪ মাসে ১০ কেজিও কমিয়েও ফেলেন, তার পরবর্তী মাসগুলিতে কী ঘটবে, তা ভেবে দেখেছেন? পরবর্তী ৬-৭ মাসে কৃচ্ছ্রসাধন না করলে সেই ওজন আবারও ফিরে আসবে দেহে। এবং এই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে। রাজের কথায়, ‘‘একাধিক গবেষণায় এই ভুলটিকেই তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম দিকে অনেকটা ওজন কমানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া, অথবা সফল হলেও তা সাময়িক হয়ে থাকবে। কাজের কাজ হবে না।’’
সে ক্ষেত্রে কী করণীয়? প্রশিক্ষকের মতে, দ্রুত হেঁটে হাঁপ ধরে যাওয়ার চেয়ে ধীরে হেঁটে সফল হওয়া ভাল। প্রতি মাসে এক কেজি করে ওজন কমানোর লক্ষ্য স্থির করার পরামর্শ দিচ্ছেন রাজ। কারণ, অধিকাংশ ব্যক্তিই মাসে ১ কিলোগ্রাম করে ওজন কমাতে পারেন। অতটাও কঠিন হবে না তা। অর্থাৎ ৬ মাসে ৬ কেজি কমাতে হবে। পরের ৩ মাসে মেদ ঝরানোর চেষ্টা ছেড়ে দিতে পারেন। তার পর বাকি ১-২ মাসে আবার ১-২ কেজি কমাতে পারেন। তা হলে মোট ১২ মাসে ৭-৮ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলায় সফল হতে পারবেন সহজে। শ্লথ গতিতে লক্ষ্যে পৌঁছোতে কম কষ্ট হবে। পরিবর্তন আসবে পাকাপাকি ভাবে।