সেই ব্যায়ামাগার। নিজস্ব চিত্র
সালটা ১৯২৫। রানাঘাটের বেনেবাগানে কয়েক জন যুবক গড়ে তুলেছেন দেশবন্ধু ব্যায়ামাগার। টিনের ঘরে নিয়মিত শরীরচর্চা চলে। মুগুর দিয়ে চলত শরীর ‘ভাঙা’। ক্রমশই বাড়তে থাকে ছেলেদের সংখ্যা। বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি তৎকালীন ইংরেজ সরকার। তাদের ধারণা ছিল, ওই ব্যায়ামাগার ‘সন্ত্রাসমূলক’ কাজের আখড়া। তাঁদের ব্যায়ামাগারে যে ইংরেজদের নজর পড়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি সেখানকার যুবকদের। বাধ্য হয়ে তাঁরা ব্যায়ামাগার সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সেখান থেকে খানিকটা দুরে শহরের বিশ্বাসপাড়ায় সরিয়ে নিয়ে আসা হয় সেই ব্যায়ামাগারকে। নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করে ওই ক্লাব। নাম হয় ‘রানাঘাট স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশন’। ১৯৩১ সালে ক্লাবের সম্পাদক নির্বাচিত হন অমিয়কুমার ঘোষ। তাঁর চেষ্টায় বর্তমান ক্লাব প্রাঙ্গণে উত্তর পশ্চিম কোণে ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠিত হয়।
সেই ব্যায়ামাগারের দ্বারোদঘাটন করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি সেই সময় কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র।
খানিকটা দূরে গাড়ি থেকে নেমে তিনি হেঁটে ব্যায়ামাগারে পৌঁছন। যে রাস্তায় তিনি নেমেছিলেন, পরবর্তীতে সেই রাস্তার নাম এখন সুভাষ অ্যাভিনিউ। ব্যায়ামাগারের দ্বারোদঘাটন করেন। যুবকদের নানা পরামর্শ দিয়ে যান।
ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই ঘটনাকে স্মরণে রাখতে ক্লাবের সামনে সুভাষচন্দ্রের আবক্ষ মূর্তি বসানো হয়েছে। সে দিনের সেই ব্যায়ামাগারে এখন বসেছে মাল্টিজিম। কলেবর বেড়েছে ক্লাবেরও। খেলা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ক্লাবের সদস্যেরা। ক্লাবের সদস্য প্রিয়জিৎ পাল বলেন, ‘‘প্রতি বছর ক্লাব নেতাজি সুভাসচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন করে। এ বারও আয়োজন করা হয়েছে। এ দিন তাঁর জীবনী নিয়েও আলোচনা করা হবে।’’