ভাদ্রের বৃষ্টিতে প্রভাব পড়ল পুজোর বাজারে

কে বলেছে, যত গর্জায় তত বর্ষায় না। এ দিন কৃষ্ণনগরে নাগাড়ে মেঘ গর্জে যে ভাবে বৃষ্টি হল, তাতে এই পুরনো প্রবাদও যেন চুপসে গেল। থমকে যাওয়া কুমোরপাড়ার চায়ের দোকানে ঘন ঘন চায়ের ‘অর্ডার’।

Advertisement

সুদীপ ভট্টাচার্য

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩৮
Share:

জল-থইথই: বিকিকিনি শিকেয়। নিজস্ব চিত্র

সাকুল্যে ঘণ্টা দেড়েকের বৃষ্টি! আর সেই বৃষ্টিতে কার্যত জলে গেল কৃষ্ণনগরের পুজোর বাজার। সামাল সামাল রব উঠল স্থানীয় পালপাড়া ও ঘূর্ণিতে। মৃৎশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা সমস্বরে বলছেন, ‘‘শেষ ভাদ্রের নাছোড়বান্দা বৃষ্টি যে এ ভাবে ডোবাবে কে জানত!’’

Advertisement

ভরদুপুরে আকাশে কালো মেঘ জমতেই প্রহর গুনছিল কৃষ্ণনগর। ত্রিপল দিয়ে প্রতিমা ঢাকতে ঢাকতে পালপাড়ার বাবলা পাল বলছিলেন, ‘‘এখন শেষ সময়। রঙের কাজ চলছে। কিছু প্রতিমা এখনও কাঁচা। সেগুলো শুকোতে দিচ্ছি রাস্তার দু’ধারে। এই সময় বৃষ্টি সব শেষ করে দেবে।’’ তড়িঘড়ি রাস্তার দু’ধারে প্রতিমা ঢাকা পড়ল প্লাস্টিকের চাদরে।

কে বলেছে, যত গর্জায় তত বর্ষায় না। এ দিন কৃষ্ণনগরে নাগাড়ে মেঘ গর্জে যে ভাবে বৃষ্টি হল, তাতে এই পুরনো প্রবাদও যেন চুপসে গেল। থমকে যাওয়া কুমোরপাড়ার চায়ের দোকানে ঘন ঘন চায়ের ‘অর্ডার’। রাস্তায় কয়েক জন খুদে আদুল গায়ে ছুটল। এ দিকে বাবলা পালের কপালে বিনবিনে ঘাম। ঘরে তিনি পায়চারি করে বিড়বিড় করছেন, ‘‘পলিথিন গলে জল ঢুকছে না তো? হতচ্ছাড়া বৃষ্টি সব শেষ করে দিল গো।’’

Advertisement

শহরের প্রাণকেন্দ্র হাইস্ট্রিটে এক হাঁটু জল। রাস্তার পাশে স্কুলের মধ্যেও জল ঢুকে গিয়েছে। লেডি কারমাইকেল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার বলে, ‘‘জল জমায় বাড়ি ফেরার টোটো পাচ্ছিলাম না।’’ জল ঢুকে ইঞ্জিন বিগড়ে যেতে পারে এই ভয়ে টোটো চালাচ্ছিলেন না অনেকেই। যে দু’একটা রিকশা মিলছিল, সুযোগ বুঝে দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকছিলেন তাঁরাও।

সপ্তাহের প্রথম দিনের এই বৃষ্টিতে বিপাকে পড়লেন ব্যবসায়ীরা। বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বেরোননি অনেক ক্রেতাই। যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁরাও জমা জল দেখে রণে ভঙ্গ দেন। এক দিনের ছুটি নিয়ে কৃষ্ণনগরে পুজোর বাজার করতে এসেছিলেন দেবযানী দেব। বৃষ্টির সৌজন্যে বাজার না করেই ফিরতে হয় তাঁকে। পোশাক ব্যবসায়ী বঙ্কিম সিংহ, মানস ঘোষেরা বলছেন, ‘‘এই সময় একটা দিন নষ্ট হওয়া মানে বিরাট ক্ষতি।’’ নদিয়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা বলছেন, ‘‘বৃষ্টিতে পুজোর বাজার মাঠে মারা গেল। হাইস্ট্রিট, পোস্ট অফিসের মোড়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভালই জল জমেছিল। তার মধ্যে ছিল বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মিটিং, মিছিল। সব মিলিয়ে সপ্তাহের শুরুটাই অগোছালো হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন