তাপস পাল। —ফাইল চিত্র।
কোটি কোটি টাকা পড়ে প্রশাসনের কাছে। অথচ তা খরচ করা যাচ্ছে না। কেননা সাংসদ হাজতে।
পরপর দু’বার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন বাংলা ছায়াছবির প্রাক্তন নায়ক তাপস পাল। এলাকায় তাঁকে তেমন দেখা না গেলেও সাংসদ তহবিলের টাকা খরচে তিনি পিছনে ফেলে দিতেন অন্য সাংসদদের। শহরে একাধিক হাইমাস্ট আলো বসেছে, নর্দমা তৈরির টাকা এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস ঘর তৈরির কাজে টাকা দিয়েছেন সাংসদ।
গত ডিসেম্বরে রোজ ভ্যালি কাণ্ডে সিবিআই তাপস পালকে গ্রেফতার করে। তার পরেও বিভিন্ন প্রকল্পের প্রস্তাব কার্যকর করা হয়। এ বছর সাংসদ তহবিলের সপ্তম কিস্তির আড়াই কোটি টাকা চলে এসেছে মাস চারেক আগেই। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “সাংসদের প্রস্তাব না পাওয়ায় ওই টাকা খরচ করতে পারব না। কিছুই করার নেই।”
প্রশাসনের কর্তাদের আক্ষেপ, এ বারের টাকা খরচ করতে না পারলে শুধু যে তা টাকা ফেরত চলে যাবে তা নয়, ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ দিতে না পারায় পরের কিস্তির টাকাও আর আসবে না। সাংসদ ছাড়া পেয়ে গেলেও জট কাটতে সময় লাগবে। সাংসদ তহবিলের টাকায় উন্নয়নের আশা ক্ষীণ। ভুগতে হবে মানুষকে। এত টাকা ফেরত চলে যাওয়া মানে উন্নয়নে বড়সড় ধাক্কা লাগা। তাঁরা চান, যে ভাবেই হোক, এই জট খুলে যাক।
প্রত্যাশিত ভাবেই, এতে কোর্টে বল পেয়েছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র মতে, “মানুষ উন্নয়নে ভোট দেন। সাংসদের তাই উচিত পদত্যাগ করা। অন্যথায় তৃণমূলেরই তাঁকে পদত্যাগ করিয়ে ফের নির্বাচনে যাওয়া উচিত।” জেলা বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেন, “এক দুর্নীতিগ্রস্তকে প্রতিনিধি করে তৃণমূল বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই কৈফিয়ত তাদেরই দিতে হবে।”
তবে সদ্য জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে ফেরা গৌরীশঙ্কর দত্তের পাল্টা দাবি, “কৈফিয়ত তো দেবে মোদী সরকার! রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে কাউকে জেলে পোরা হলে শাসককেই তো কৈফিয়ত দিতে হবে।”