পড়ুয়াদের প্রশ্ন করার আগে তাঁদেরই উত্তর দিতে হয় হাজারও প্রশ্নের।
—‘আপ মাস্টারজি হ্যায়?’ নিত্যকার প্রশ্নটা শুনতে শুনতে মাঝে মাঝেই খেই হারিয়ে ফেলেন চরমেঘনার শিক্ষক বিপদ প্রামাণিক। স্কুলে যাচ্ছেন তো, নাকি ফিতের মতো মাথাভাঙাটা পেরিয়ে ওপারে পাড়ি দেওয়ার জন্য মোটরবাইক নিয়ে সাতসকালে বেরিয়েছেন? নিজের মনেই উঁকিঝুঁকি মারে প্রশ্নটা।
সামনের জংলা উর্দি ফের ছুড়ে দেয়, ‘কেয়া মাস্টারজি, কোনসা স্কুল? বাতাও?’ ফের গুলিয়ে যায় বিপদবাবুর। আমতা আমতা করে বলেন, ‘‘ওই যে বললাম, চরমেঘনা প্রাইমারি স্কুল।’’
এক বার তো স্কুলে যেতে গিয়ে রীতিমতো অপমানিত হয়েছিলেন বিপদবাবু। বিএসএফের এক জওয়ানকে ভোটার কার্ড দেখানোর পরেও তিনি বোঝাতে পারেননি যে, শিক্ষকদের আলাদা করে কোনও পরিচয়পত্র থাকে না। উল্টে ‘বেশি কথা বলার অপরাধে’ তাঁর বাইকের চাবিটাই কেড়ে নিয়েছিলেন সেই জওয়ান।
কাঁটাতার পেরিয়ে যে শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হয় তাঁরাই জানেন স্কুলে যাওয়ার কী যন্ত্রণা! শিক্ষকদের এমন হয়রানি রুখতে নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সংসদ জেলার সব শিক্ষকদের জন্য তৈরি করেছে সচিত্র পরিচয়পত্র। বিপদবাবুর মতো অনেকেই বলছেন, ‘‘স্কুলে যাওয়ার সেই ঝক্কি থেকে তো রেহাই পেলাম।” সংসদের সভাপতি রমাপ্রসাদ রায় বলেন, “শিক্ষকদের জন্য তো বটেই, সংসদের কর্মী, আধিকারিকদেরও এই পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। এমনকী, আমি নিজেও তো সেটা পরেই অফিসে আসছি।’’