প্রতীকী ছবি
করোনা ঠেকাতে প্রতিদিন সংবাদমাধ্যম থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্র বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ শুনছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্ট জনেরাও। আর ততই নিজেদের মধ্যে তৈরি হওয়া আতঙ্কে করোনাকে পরাস্ত করতে রণসজ্জায় সজ্জিত করতে কসুর করছেন না কেউ। তার জন্য হয়ত ছুটেছেন মাস্ক আনতে সেই দোকান থেকেই বগলদাবা করে নিয়ে এসেছেন স্যানিটাইজ়ার ভর্তি বোতল। আবার বিকেলে ফাঁক বুঝে কিংবা অফিস ফেরতা রাস্তা থেকেই কিনে নিয়েছেন মাউথ ওয়াশ, ভিটামিন সি, কিংবা জিঙ্ক ট্যাবলেটের মতো বিশেষ কিছু ওষুধ। যেগুলো চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই মিলছে ওষুধের দোকানে।
শহরের ওষুধের কারবারিরা বলছেন, “যে হারে ভিটামিন সি বিক্রি বাড়ছে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই বিক্রি বন্ধ হবে না। না হলে চাহিদা মতো জোগান দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
এক খুচরো ওষুধ বিক্রেতা অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, “মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় শুনছে, কখনও নিজের মনগড়া বিশ্বাস থেকে আবার কোনও কোনও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনেও এই ওষুধ নিতে আসছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে এই ওষুধগুলোর।” পাশাপাশি মাস্ক স্যানিটাইজ়ারের চাহিদা তো আছেই। ওই বিক্রেতা বলেন, “আগে দোকানে খুঁজে পাওয়া যেত না দশটা স্যানিটাইজ়ার। আর এখন চাহিদার তুলনায় আমদানি কম।”
সমাজ বিজ্ঞান নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁরা বলছেন, “করোনার চোটে স্যানিটাইজ়ার ধনী ও গরিবের ঘরে ব্যবহার হওয়ায় বাজারের হাল এই হয়েছে।” চাহিদা বেড়েছে পালস অক্সিমিটারেরও।
এক ওষুধ বিক্রেতা তরুণ ঘোষ বলছেন, “সাধারণ মানুষ চাইছেন নিজেরাই নিজেরাই চিকিৎসা করাতে। তাঁরা শুনছেন শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ ৯০ শতাংশের কম হলে শ্বাসকষ্ট হবে। সেই কারণে পালস অক্সিমিটার হাতে লাগিয়ে আধ ঘণ্টা অন্তর নিজেকে দেখে নিচ্ছেন অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক আছে কি না।” আর অক্সিজেনের ঘাটতি পড়লেই খোঁজ করছেন অক্সিজেন সিলিন্ডারের। ইতিমধ্যেই বাজারে পোর্টেবেল অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদাও বেড়েছে। অক্সিমিটারের মতোই অফিস ব্যগের মধ্যে সিঁধিয়ে যাচ্ছে অক্সিজেনের ছোট সিলিন্ডারও।
বিক্রেতারা বলছেন, “পাঁচশ থেকে শুরু সর্বোচ্চ আড়াই হাজার দাম পড়বে একটি পালস অক্সিমিটারের।” বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি শুভ্র ঘোষ বলেন, “করোনা আক্রান্ত মানুষকে প্রথমে মাস্ক পরালে যে কাজ হতো এখন সেই পরিস্থিতি বদলে সবাই মাস্ক পড়ছেন। স্যানিটাইজ় করছেন নিজেদের। কিন্তু পালস অক্সিমিটারের চাহিদা হঠাৎ বেড়েছে। বাড়ছে পোর্টেবেল অক্সিজেন সিলিণ্ডারের চাহিদাও।”
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন প্রধানত অস্ত্রোপচারের সময় আর ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে এই পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করা হত।