থানায় তখনও তেমন লোকজন আসতে শুরু করেনি। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছেন ইসলামপুর থানার ওসি। অন্যান্য পুলিশকর্মীদের কেউ আবাসন থেকে থানার দিকে এগোচ্ছেন, কেউ আবার সবে জুতোয় পা গলিয়েছেন।
ঠিক সেই সময় থানার একেবারে গা লাগোয়া ইসলামপুর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ভেসে এল ভোঁ...!
টানা সেই সাইরেন শুনে চেয়ার থেকে লাফিয়ে ব্যাঙ্কের দিকে দৌড়লেন ওসি। পিছনে ছুটলেন অন্য পুলিশকর্মীরাও। শুধু কি থানার লোকজন? ফুটন্ত চা ফেলে ব্যাঙ্কের দিকে ছুটলেন চায়ের বিক্রেতা। ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরা থতমত খেয়ে কেউ ব্যাঙ্কের কোণায় গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। কেউ আবার দৌড়ে পালাতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছেন চটিজোড়া।
বুধবার সকাল দশটা নাগাদ ভরা ইসলামপুর বাজারে সে এক হইহই কাণ্ড! কিন্তু ডাকাত কোথায়?
ছুটতে ছুটতে ব্যাঙ্কের এক গ্রাহক বলছেন, ‘‘তা তো জানি না। কিন্তু সাইরেন বাজল যে।’’
বিষয়টি খোলসা করলেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সত্যসাধন দে। তিনি বলছেন, ‘‘আর বলবেন না। যান্ত্রিক গণ্ডগোলের কারণেই সাইরেন বেজেছে।’’ বিরক্ত এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘‘এ কী রকম কাণ্ড বলুন তো? সকালবেলায় কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছিল।’’
মুচকি হাসছেন চা বিক্রেতা, ‘‘আমারও এক বার মনে হয়েছিল, সকালবেলায় কি আর ডাকাত আসবে?’’
থতমত খেয়ে ব্যাঙ্কের এক কর্মীও বলছেন, ‘‘আমাদেরও তাই মনে হয়েছিল। কিন্তু দিনকাল তো ভাল নয়।’’ এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এমন কাণ্ড কিন্তু এই প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েক বার সাইরেন বেজেছিল। লোকজনও ভেবেছিলেন, ব্যাঙ্কে ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু বার বার এমন ভাবে অকারণে সাইরেন বাজলে কিন্তু সত্যিই যে দিন বিপদ হবে সে দিন আর কাউকেই পাওয়া যাবে না।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছেন, যান্ত্রিক গোলযোগেই এমন বিপত্তি।