খুঁটিয়ে পরীক্ষা ‘কল লিস্ট’, জোড়া খুনে ধৃত আরও ৩

ধৃতের সংখ্যা যত বাড়ছে রহস্যও আরও ঘণীভূত হচ্ছে কল্যাণীর জো়ড়া খুনের ঘটনায়। শনিবার এই ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এঁরা হলেন যথাক্রমে সুশান্ত মণ্ডল ওরফে ব্ল্যাক মাইজা, সুকুমার মণ্ডল এবং সমীর মণ্ডল ওরফে মুন্না। ব্ল্যাক মাইজা ও মুন্না আটঘরের বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ০৭:১০
Share:

ধৃতের সংখ্যা যত বাড়ছে রহস্যও আরও ঘণীভূত হচ্ছে কল্যাণীর জো়ড়া খুনের ঘটনায়। শনিবার এই ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এঁরা হলেন যথাক্রমে সুশান্ত মণ্ডল ওরফে ব্ল্যাক মাইজা, সুকুমার মণ্ডল এবং সমীর মণ্ডল ওরফে মুন্না। ব্ল্যাক মাইজা ও মুন্না আটঘরের বাসিন্দা। সুকুমারের বাড়ি বারো হাত এলাকায়। শুক্রবার রাতে তিন জনকে প্রথমে আলাদা-আলাদা ভাবে ও তার পর মুখোমুখি বসিয়ে শুরু হয় জেরা। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের কথায় প্রচুর অসঙ্গতি মিলেছে। তার পরেই তাঁদের গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন আশিস মণ্ডল নামে এক গাড়িচালক।

Advertisement

জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, ওই তিন জন ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাঁদের জড়িত থাকার প্রমানও মিলেছে প্রাথমিক ভাবে। যেমন, ব্ল্যাক মাইজা জানিয়েছে, তিনি ঘটনার কথা জানতে পারেন বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা নাগাদ। কিন্তু মুন্নার দাবি, তিনি জেনেছিলেন ভোর তিনটে নাগাদ। তার পর তিনি তা ব্ল্যাক মাইজাকে জানান। তখন ব্ল্যাত মাইজা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে যান এবং লোক জন জুটিয়ে ওই রাতেই যান ঘটনাস্থলে!’’

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ভানু এক সময়ের এলাকার বাহুবলী ব্ল্যাক মাইজা-র সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতেন। মাইজা-র পেয়ারা বাগান ও মাছ চাষের পুকুরের দেখাশোনা করতেন। অন্য ধৃতরাও ছিলেন মাইজারের শাগরেদ। মাস খানেক ধরে ভানুর সঙ্গে ওই সঙ্গীদের কোনও কারণে বনিবনা হচ্ছিল না। বুধবার রাতে মাইজারের দলের লোক জন স্থানীয় একটি কারখানার পাশের জমিতে খাওয়া-দাওয়ার আসর বসায়। সেখানে ভানুর সঙ্গে ধৃতদের এক জনের ঝামেলা বেধেছিল। সেখানে পেশায় গাড়ির চালক আশিস তাঁর পাশের বাড়ির ছেলে দীপঙ্করকেও ডাকে। পুলিশের অনুমান, ওই রাতে নিজেদের মধ্যে ঝামেলার জেরেই পরে হয়তো দু’জনকে খুন হতে হয়েছে। জোড়া দেহ যেখানে উদ্ধার হয়েছে তার পাশেই রয়েছে একটি কারখানা। সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করছে পুলিশ। তবে ফুটেজগুলি অস্পষ্ট হওয়ায় এখনও সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পাওয়া যায়নি।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার ভোরে কল্যাণীর রবীন্দ্রনাথ কলোনির বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডল (২৬) ওরফে ভানু ও পাশের বিদ্যাসাগর কলোনির দীপঙ্কর ঘটকের (১৮) ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে স্বয়ং জেলার পুলিশ সুপার বৃহস্পতিবার রাতেই চলে আসেন কল্যাণী থানায়। এই ঘটনায় অনেকের মোবাইল নম্বরের কল ডিটেলস পরীক্ষা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ঘটনার দিন রাতে ওই এলাকায় মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী চারটে সংস্থার সব গ্রাহকের কল ডিটেলস পরীক্ষা করছে পুলিশ। ওই রাতে বাইরে থেকে কেউ ওই এলাকায় ঢুকেছিল কিনা, তা-ও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। মোবাইল ফোনের সূত্রে ধরেই পুলিশ ইতিমধ্যে ধৃত চার জন বাদে আরও এক জনকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছে। পুলিশের দাবি, ওই যুবকের সঙ্গে মৃত ভানু ঘটনার দিন অনেক রাত পর্যন্ত ছিলেন। সেই যুবক আপাতত গা ঢাকা দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন