প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের ব্রিগেড ভরাতে জেলার অধিকাংশ বেসরকারি বাসই কলকাতার পথ ধরায় শুক্রবার থেকেই জেলা জুড়ে নিত্যযাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ দিন সকাল থেকেই বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন রুটের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের আক্ষেপ আর হা হুতাশ! পরিস্থিতি শনিবারও যে বদল হবে না, বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে তা স্পষ্ট।
তৃণমূলের মু্র্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা পরিস্থিতি আঁচ করে আগাম জানিয়ে রাখছেন, ‘‘শনিবার-রবিবার রাস্তায় লোকজন কম বেরোন। ফলে সমস্যাও কম হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জেলার জনগণের কাছে এটিকি সমস্যা মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা থেকে প্রায় দু’লক্ষ কর্মী সমর্থক ব্রিগেডের সমাবেশে নিয়ে যাওয়ার ‘টার্গেট’ ছিল জেলা নেতাদের। কে কত বেশি লোক নিয়ে যেতে পারে, সেই প্রতিযোগিতা সামাল দিতে গিয়ে রুটের অধিকাংশ বাসই তাই পথ হারিয়ে কলকাতার দিকে ছুটেছে!
গত কয়েক দিনে বার বার জেলায় এসে সভা করে গিয়েছেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই জেলা থেকে ৩৫০০ হাজার ছোট গাড়ি এবং ৬০০ বাস ভাড়া করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনেও বহু কর্মী-সমর্থক কলকাতা যাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। ফলে এ দিন সকাল থেকে ট্রেন ধরাও যে দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে, বলাই বাহুল্য।
বহরমপুর-করিমপুর, বহরমপুর-সাগরপাড়া, বহরমপুর-কান্দি, বহরমপুর-জঙ্গিপুর, বহরমপুর-কৃষ্ণনগর-সহ দূরপাল্লার অধিকাংশ বাসই শুক্রবার থেকে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার বিকাল থেকেই অধিকাংশই পাড়ি দিয়েছে কলকাতা। গত সপ্তাহে দেশজুড়ে বামেদের ডাকে দু’দিনের ধর্মঘট হয়েছে। ধর্মঘটের প্রথম দিন মুর্শিদাবাদ জেলায় পরিবহণের উপর প্রভাব পড়েছিল। ফলে সে দিন জেলার নিত্য যাত্রীরা সমস্যায় পড়েছিলেন। এ বারে শাসকদলের কর্মসূচির জেরে বাস ভাড়া নেওয়ায় ফের দুর্ভোগে পড়তে চলেছেন জেলার বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বলেন, ‘‘বনধ থেকে শুরু করে সভা সমিতির জেরে মানুষ দুর্ভোগে ক্রমেই বাড়ছে, এ আর নতুন কথা কী!’’
জেলা বাস মালিক সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন রুটে প্রায় ৭০০ বাস চলাচল করে। তার মধ্যে ৬০০ বাস ব্রিগেডে চলে গেলে, জেলার রুটগুলিতে চলার জন্য বাস থাকবে না বললেই চলে। যদিও মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল সাহা বলেন, ‘‘সংগঠনের কাছ থেকে ব্রিগেডের জন্য বাস ভাড়া নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন রুট থেকে স্থানীয়ভাবে বাস ভাড়া নিয়েছে। ফলে কি পরিমাণ বাস ব্রিগেডের সভায় যাচ্ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’’