‘মাটির তল দিইয়ি এত লোক যেছে কুথাই’

ডোমকলের ফজু-রাজ্জাক যদি মেট্রোবিমুখ হন তা হলে, মেট্রোর চলমান সিঁড়িতে চেপে জীবন ‘ধন্য’ হয়েছে ইসলামপুরের মানারুল ইসলামের। তিনি বলছেন, ‘‘আরে ভাই কলকাতা আগেও গিয়েছি। কিন্তু এমন সিঁড়িতে চাপিনি।’’

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২৩
Share:

ব্রিগেড শেষে জোর কেনাকাটা। কলকাতায়। নিজস্ব চিত্র

মেট্রো স্টেশনের সামনে থমকে গিয়েছেন তিনি— ‘পিপড়ির মুতোন লাইন দিইয়ি মাটির নীচে এত লোক যেছে কুথাই ভাই?’

Advertisement

ডোমকলের বাবলাবোনার ফজু মণ্ডলের বিস্ময়ের উত্তরে তৃণমূল কর্মী আসাদুল ইসলাম বলছিলেন, ‘‘মাটির নীচ দিয়ে রেল লাইন আছে। ওটাকে পাতাল রেল বলে, চল ওখানেই যাব আমরা। কিন্তু রবীন্দ্রসদন মেট্রো স্টেশনের সামনে গিয়ে থমকে গিয়েছিল ফজু মণ্ডল আর জব্বার শেখ। দু’জনের দাবি, মাটির নীচে গেলে একবারই যাব। ধড়ে জান থাকতে পাতালে নামব না, রেলে চড়া অনেক দূরের কথা। জনা কয়েক বন্ধু হাত ধরে অনেক টানাটানি করেও শেষ পর্যন্ত ‘পাতালে’ আর নামাতে পারেননি ফজু, রাজ্জাককে। শনিবার ব্রিগেডের সভা শেষে ঘুরতে বেরিয়ে তৃণমূল সমর্থকদের নিয়ে এমন নানান অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। সাক্ষী থাকল শহর কলকাতাও। তৃণমূল কর্মী আসাদুলের দাবি, ‘‘শেষে ফজু আর রাজ্জাককে নিয় বড় মুশকিলে পড়েছিলাম। আমাদের সঙ্গে থাকা আরও জনা কয়েক সমর্থক এই প্রথম কলকাতা এসেছেন। তাঁদের আব্দার, জীবনে আর কলকাতা আসা হবে কি হবে না, পাতাল রেলে চেপেই দেখব শহর।’’ ফলে ওই দু’জনকে দাঁড় করিয়েই মেট্রো ভ্রমণ শেষ করেছিলেন তাঁরা।

ডোমকলের ফজু-রাজ্জাক যদি মেট্রোবিমুখ হন তা হলে, মেট্রোর চলমান সিঁড়িতে চেপে জীবন ‘ধন্য’ হয়েছে ইসলামপুরের মানারুল ইসলামের। তিনি বলছেন, ‘‘আরে ভাই কলকাতা আগেও গিয়েছি। কিন্তু এমন সিঁড়িতে চাপিনি।’’

Advertisement

তবে, জলঙ্গির এক তৃণমূল কর্মী একটি নামী শপিং মলে গিয়ে যে কাণ্ডটা করেছিল তা মনে করে এখনও বুকটা কেঁপে উঠছে নেতাদের। ‘‘কী লজ্জার ঘটনা বলুন তো’’ বলছেন স্থানীয় ওই নেতা। মলে ঢুকেই একটা রুমাল আর একটা মোবাইল ফোন পকেটে পুরে ফেলেছিল সে। ভেবেছিল, লোকে এ ভাবেই তো যার যেমন খুশি জিনিস নিচ্ছে। তারও বুঝি ওই হক আছে!

ব্যাপারটা দেখে ফেলে ওই নেতাই তাঁকে সামলান। অনেক বুঝিয়ে যেখানকার জিনিস সেখানে রেখে তবে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন তিনি। ব্রিগেড যাত্রার এমন চমকপ্রদ হাজারও ছবির মধ্যে ধুলিয়ানের সফিকুর আলির সেলফি তোলার ঘটনাটি না বললে অবশ্য সবটাই মাঠে মারা যাবে! ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে পিছনে রেখে একটা নিজস্বী তুলতে গিয়ে তিনি প্রায় নেমে পড়েছিলেন ঘোর ব্যস্ত রাস্তায়। এক চুলের জন্য বেঁচে যান অন্য কর্মীদের তৎপরতায়। না হলে, এটাই বুঝি তাঁর শেষ ব্রিগেড হত!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement