TMC

ইউএসজি দুর্নীতি, অভিযুক্ত নেতা

‘প্রতিভা আল্ট্রাস্ক্যান সেন্টার’ নামে ওই বিতর্কিত সেন্টারের মালিক এলাকার প্রাভাবশালী তৃণমূল নেতা ভীমচন্দ্র কোলে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি

অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় রানাঘাটের একটি আল্ট্রা সোনোগ্রাফি সেন্টারের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের আবেদন বাতিল করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরকে বুড়়ো আঙুল দেখিয়ে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও সেন্টারটি দিব্যি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের কাছে ‘প্রতিভা আল্ট্রাস্ক্যান সেন্টার’ নামে ওই বিতর্কিত সেন্টারের মালিক এলাকার প্রাভাবশালী তৃণমূল নেতা ভীমচন্দ্র কোলে। তিনি দলের স্থানীয় আনুলিয়া অঞ্চল সভাপতি। নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি সেন্টার চালু রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটা অংশের দাবি, ওই সেন্টারকে ছাড়়পত্র দেওয়ার জন্য শাসকদলের প্রভাবশালী নেতাদের সুপারিশ আসা শুরু করেছে।

তবে প্রভাব খাটানোর কথা অস্বীকার করে ভীমচন্দ্র কোলে বলছেন, “লাইসেন্সের মেয়াদ বাতিল হয়ে যাওয়ার পর ভুল করে কয়েকদিন ইউএসজি করা হয়েছিল। তার জন্য যা আর্থিক জরিমানা দিতে হবে আমি দিতে রাজি। তবে অন্য অভিযোগ ঠিক না তা আমি প্রমাণ সহকারে স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দিয়েছি।”

Advertisement

এখন প্রশ্ন হল, ‘ভুল করে’ও যদি কেউ বিনা লাইসেন্সে ইউএসজি সেন্টার চালান তা হলে কেন তাঁর সেন্টারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে তা বন্ধ করা হবে না?

রানাঘাট মহকুমাশাসক হরসিমরণ সিংহের কথায়, “আমরা ইউইসজি বন্ধ রাখতে বলে দিয়েছি। আমি খোঁজ নিয়ে দিখছি ওখানে কী পরিস্থিতি আছে। তার পরও যদি ওটি চালু থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” আর জেলা তৃণূমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন যে, নিয়মের বাইরে কোনও কিছুই হবে না। নিয়মের উর্দ্ধে কেউ নন। তা তিনি যে দলেরই হোন না কেন।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই কেন্দ্রের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে এই বছর ২৩ মার্চ। ১৫ জানুয়ারি লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে ৫ মে সেন্টারের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে যান রানাঘাট মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্য। সব দিক খতিয়ে দেখে তিনি পুনর্নবীকরণের আবেদন বাতিল করে দেন। সেই সঙ্গে পুষ্পেন্দুবাবু ওই ইউএসজি সেন্টারের একাধিক অনিয়মের কথা জানিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকে চিঠি দেন। পুষ্পেন্দুবাবু বলছেন, “লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ওই সেন্টারের ইউএসজি করা হচ্ছে। যে মেশিন দেখিয়ে লাইসেন্স নেওয়া হয়েছিল সেই মেশিনের সঙ্গে যে মেশিন ব্যবহার হচ্ছে তার কোনও মিল নেই।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “নথিভূক্ত রেডিওলজিস্ট আছেন এক জন। কিন্তু রিপোর্টে সই করছেন একাধিক রেডিওলজিস্ট। ইউএসজির সম্মতিপত্রে রেডিওলজিস্টের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এখানে সেটা করা হচ্ছে না।”

পুষ্পেন্দুবাবু প্রথম বার আবেদন বাতিল করার পর ৭ জুলাই ওই কেন্দ্রের তরফে ফের পুনর্নবীকরণের আবেদন কর হয়। আবারও তিনি সেই আবেদন বাতিল করেন এবং ওই কেন্দ্রকে শো-কজ করা হয়। গোটা বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন