বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতে কাজ শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ তুলে অফিসে তালা ঝোলাল তৃণমূল।
ধুবুলিয়ার সাধনপাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য সংখ্যার নিরিখে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি। প্রধান এবং উপপ্রধান তাদেরই। কিন্তু তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির তিন সদস্যকে ধরলে সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল। ফলে সাধারণ সভায় সংখ্যার জোরে তৃণমূল সে সব কাজ অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছে তা পছন্দ নয় বিজেপির প্রধানের। তিনি সেই কাজ করানোর জন্য টেন্ডার ডাকছেন না বলে অভিযোগ। ফলে থমকে যাচ্ছে কাজ।
এই অভিযোগ তুলেই বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভবনে তালা দিয়ে দেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। খবর পেয়ে চলে আসেন কৃষ্ণনগর ২-এর বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস। দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর তালা খুলে দেওয়া হয়।
কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের সাধনপাড়া-২ পঞ্চায়েতে মোট ১৪টি আসনের মধ্যে আটটি আসন জিতেছে বিজেপি, ছ’টি তৃণমূল। বিজেপি বোর্ড গড়ে। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির তিন প্রতিনিধিকে ধরলে তৃণমূলের পক্ষে হয় ৯ জন। বিজেপির অভিযোগ, সেই সুযোগে তৃণমূল নিজেদের মতো করে উন্নয়ন খাতে আসা টাকা খরচের পরিকল্পনা করছে। শুধু নিজেদের সদস্যদের এলাকায় কাজের প্রকল্প তৈরি করছে। বিজেপি সদস্যদের এলাকার উন্নয়নের অর্থ ততটা বরাদ্দ করছে না।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের ৪২ লক্ষ টাকা এসেছে পঞ্চায়েতে। রাস্তা তৈরি হবে সেই টাকায়। প্রথম সাধারণ সভায় সেই মতো প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। অর্থের স্থায়ী সমিতিতে তা পাশও হয়ে যায়। কিন্তু প্রধান টেন্ডার ডাকতে অস্বীকার করেন। পঞ্চায়েত প্রধান উন্নতি দত্ত বলেন, “সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় তৃণমূল সব কাজ নিজেদের এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সদস্যদের এলাকায় কি তবে কোনও কাজ হবে না? আগে এটার সুরাহা হোক, তার পর দেখব।”
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, সাধারণ সভায় সকলে আলোচনা করে সহমতের ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রধান সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে চাইছেন না। টেন্ডার ডাকছেন না। এ দিন জটিলতা তৈরি হওয়ায় পঞ্চায়েত অফিসে যান তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য সুব্রত ঘোষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনিতা হালদারেরা। দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনা হলেও জট খোলেনি। বিডিও উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। তার পরেই তৃণমূলের লোকজন পঞ্চায়েতে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বিডিও অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান করে কাজ শুরু করা যাবে।”