তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
আবার ‘প্রতারিত’ তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। মুর্শিদাবাদে তাঁর বাবরি মসজিদের শিলান্যাসে সৌদি আরব থেকে ‘ক্কারী’ আসছেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। পরে জানা যায়, দুই ক্কারী বা মক্কার ইমাম আদতে বাংলারই বাসিন্দা। এ বার হায়দরাবাদ থেকে যে আট জন নিরাপত্তারক্ষীকে এনেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন, জানা গেল, তাঁরা সকলেই কলকাতার! বুধবার রাতে এই ‘সত্য’ উদ্ঘাটনের পর হতাশ এবং বিস্মিত হুমায়ুন। বিধায়কের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি কোন দিক সামলাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না।
বুধবার জানা গিয়েছিল, হুমায়ুন তাঁর নিরাপত্তায় হায়দরাবাদ থেকে আট জনকে নিয়োগ করছেন। তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন, এক পরিচিতের মাধ্যমে ভিন্রাজ্যের নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বুধবার থেকে তাঁদের নিরাপত্তার ভার দেবেন। কিন্তু রাত হতেই বিশ বাঁও জলে বিধায়ক। তিনি জানতে পারেন ওই আট জনই নাকি কলকাতার। এমনকি, মঙ্গলবার রাত থেকে যে ক’জন হুমায়ুনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা স্থানীয় বলে জানতে পারার পরে সকলকেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন তিনি। বিধায়ক জানান, হায়দরাবাদ ভিত্তিক ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তারা জানায়, তাদের নিরাপত্তারক্ষীরা অস্ত্র সমেত কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে রয়েছেন। প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় এই বিভ্রান্তি বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
তার পরে হুমায়ুন জানতে পারেন, তাঁরা সকলেই কলকাতার। তার পর আকাশ থেকে পড়েন বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বিরুদ্ধে বিরাট চক্রান্ত চলছে। এত বৃহত্তর চক্রান্ত চলছে যে আমি খেই হারিয়ে ফেলছি। যাঁদের হায়দরাবাদি বলে জানতাম, পরে জানলাম তাঁরা সকলেই কলকাতার।’’ কী ভাবে এত বড় ভুল হল? তৃণমূলের বিদ্রোহী বিধায়ক বললেন, ‘‘সব বলব। একটু সবুর করুন।’’
উল্লেখ্য, এর আগেও এক বার ‘ঠকেছেন’ হুমায়ুন। গত ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় মসজিদের শিলান্যাস করেন তিনি। রাজ্য-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মগুরুদের আসার কথা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন। তাঁদের জন্য এলাহি খাওয়াদাওয়ারও আয়োজন করেছিলেন। আয়োজকেরা কর্মসূচির আগে জানান, সৌদি থেকে আসছেন দুই ‘ক্কারী’। অভিযোগ, ওই দুই ধর্মগুরুর এক জন ক্কারী সুফিয়া মুর্শিদাবাদেরই দৌলতাবাদের বাসিন্দা। দ্বিতীয় জন, শেখ আবদুল্লা পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। বুধবারের রক্ষী-বিভ্রাটের পর হুমায়ুনের এক ঘনিষ্ঠের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বড় কাজ করতে গেলে অনেক কিছু সইতে হয়। ভাইজান ঠকছেন। ঠেকে শিখবেন।’’