Humayun Kabir

হুমায়ুনের সুরক্ষায় হায়দরাবাদি রক্ষী! বাবরি তৈরিতে জমির জট, বিধায়ক বলছেন, ‘খুন হতে পারি, কিন্তু মসজিদ করেই ছাড়ব’

তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেনি। তার পরেও হায়দরাবাদ থেকে আট জন নিরাপত্তারক্ষী আনিয়েছেন তিনি। কেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৭
Share:

হায়দরাবাদ থেকে আনা নিরাপত্তারক্ষীদের মাঝে হুমায়ুন কবীর। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের অবস্থানের বিপরীতে গিয়ে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেছেন। কিন্তু এখন মসজিদ তৈরি নিয়ে জমি-জটের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এর মধ্যে নাকি অজস্র হুমকি পাচ্ছেন তিনি। তাই হায়দরাবাদ থেকে আট জন নিরাপত্তারক্ষী আনালেন ভরতপুরের বিধায়ক। মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসির রাজ্য থেকে আসা সেই আট নিরাপত্তারক্ষী বুধবার থেকে হুমায়ুনের প্রহরার দায়িত্ব নিলেন।

Advertisement

মসজিদ তৈরির আগে রাজ্য সরকারকে একের পর এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন হুমায়ুন। দাবি করেছিলেন, তিনি সাসপেন্ড হওয়ার পরে মমতার সরকার তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিজের দুটো লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরবেন। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের তরফে হুমায়ুনের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের কোনও খবর নেই। বস্তুত, যে তিন জন কনস্টেবলকে বিধায়কের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছিল, তাঁরা এখনও আছেন। তার পরেও মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসির রাজ্য থেকে হঠাৎ নিরাপত্তারক্ষী আনলেন কেন? হুমায়ুনের জবাব, ‘‘কাউকে দিয়ে খুন করিয়ে দিতে পারে আমাকে।’’ কারা? স্পষ্ট করেননি বিধায়ক। তাঁর সংযোজন, ‘‘এটুকু বলে রাখছি, আল্লাহ আছেন। মেরে ফেললেও মসজিদ আমি তৈরি করেই ছাড়ব।’’

জানা যাচ্ছে, পাওয়ার সিকিউরিটি সার্ভিসেস নামে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে নিরাপত্তারক্ষী এনেছেন হুমায়ুন। ওই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছি। আমার পরিবার এবং আত্মীয়-বন্ধুদের অনেকেরই ব্যক্তিগত লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র আছে। কিন্তু তা দিয়ে অন্যের নিরাপত্তায় ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। সব দিক চিন্তাভাবনা করে হায়দরাবাদের একটি সংস্থার থেকে এই নিরাপত্তারক্ষীদের আনানো হয়েছে। আমার এক পরিচিতের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলাম। যত দিন না আদালতের নির্দেশে আমি সুরক্ষা পাচ্ছি, তত দিন এই নিরাপত্তারক্ষীরা সর্বক্ষণ আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।’’ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ হল হুমায়ুনের মসজিদ শিলান্যাস এবং নিজের দল করার ঘোষণার প্রেক্ষিতে ওয়েইসির দলের সঙ্গে তাঁর জোটের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিধায়ক সেই সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। আপাতত তাঁর চোখ মসজিদের দিকে।

Advertisement

বিশাল আয়োজন করে কয়েক হাজার মানুষকে বিরিয়ানি খাইয়েছেন। কিন্তু মসজিদ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৩০ বিঘা জমি জোগাড় করতে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হুমায়ুন। এর আগে তিনি ঘোষণা করেছিলেন বেলডাঙায় শিলান্যাস হবে। শেষ পর্যন্ত জমির অভাবে রেজিনগর থানার ছেতিয়ানিতে মাত্র তিন কাঠা জমির উপর প্রতীকী শিলান্যাস করতে হয়েছে তাঁকে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মসজিদ তৈরির কাজ শুরু করার কথা ঘোষণা করে দিলেও ৩০ বিঘা জমির সন্ধানে জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক। হুমায়ুনের বাবরি মসজিদের ট্রাস্টি বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ মইনুল হক ওরফে রানা জানান, ২৫ বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বেলডাঙার মির্জাপুর থেকে রেজিনগরের ছেতিয়ানি এলাকার মধ্যে জমিমালিকদের সঙ্গে কথা অনেকটাই এগিয়েছে।’’ তবে জমিটি কোথায় এবং মালিক কে বা কারা তা গোপন রাখেন তিনি। মইনুলের আরও দাবি, শিলান্যাসের পর এলাকার জমির মালিকদের মধ্যে অনেকে স্বেচ্ছায়, এমনকি বিনামূল্যেও জমি দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিন্তু এক সঙ্গে ৩০ বিঘা জমি পাওয়া যাচ্ছে না বলেই খবর। হুমায়ুনের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর। তাঁর কথায়, ‘‘মসজিদ তো আর আকাশে হবে না, মাটিতেই হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে যখন মসজিদ নির্মাণ হবে। তখন জানতে পারবেন কোন জমিতে হচ্ছে। তার আগে জমি নিয়ে কোনও কথা বলব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement