TMC MLA

তৃণমূল বিধায়ককে শোকজ় করল দল, বিরোধীদের নিয়ে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের অভিযোগ!

তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী শাওনির ঘনিষ্ঠ জেলা তৃণমূল যুব সভাপতির সঙ্গে জলঙ্গির বিধায়কের দ্বন্দ্ব পুরনো। সেটাই এখন প্রবল আকার নিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৪৯
Share:

জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক। —ফাইল চিত্র।

মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল অব্যাহত। ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের পর এ বার জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাককে শোকজ় করল তৃণমূল। বিধায়কের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাকিবুল ইসলামের দ্বন্দ্বে দলের অন্দরে শোরগোল শুরু হয়। সেই বিধায়ককে বাম-কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠন করার জন্য শোকজ় করা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। অভিযোগ, দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট করেন জলঙ্গির তৃণমূল বিধায়ক। শুধু তাই নয়, তিনি দলের প্রস্তাবিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া ছাড়াও একাধিক দল-বিরোধী কাজ করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিস ধরিয়েছেন তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়। বিধায়ক পাল্টা দলের জেলা সভানেত্রীর বিরুদ্ধে ‘একনায়কতন্ত্র’, ‘স্বৈরাচারিতা’ এবং নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে দল চালানোর অভিযোগ এনেছেন। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী নির্বাচনের পর এ বার পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠন নিয়ে জলঙ্গি তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল তুঙ্গে উঠেছে।

Advertisement

তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনির ‘ঘনিষ্ঠ’ জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি রাকিবুলের সঙ্গে জলঙ্গির বিধায়কের ‘দ্বন্দ্ব’ অনেক পুরনো। তার মধ্যে এই পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দু’জনের লড়াই চরম আকার নেয়। ভোটের আগে জেলার চার বিধায়ক জেলা সভানেত্রীর বিরুদ্ধে সাংবাদিক বৈঠক করে একযোগে ‘বিদ্রোহ ঘোষণা’ করেন। রফাসূত্র বার করতে হস্তক্ষেপ করতে হয় রাজ্য নেতৃত্বকে। মন্ত্রী মলয় ঘটক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। আশা করা গিয়েছিল, সব কিছু মিটে গিয়েছে।

কিন্তু, বৃহস্পতিবার সকালে বিরোধীদের সঙ্গে নিয়েই স্থায়ী সমিতি নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত সমিতিতে ঢুকতে দেখা যায় জলঙ্গির তৃণমূল বিধায়ককে। তৃণমূল সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাকিবুল। আবার শুরু হয় তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতর। বোর্ড গঠনের সময় বিধায়কের চার অনুগামী-সহ বিরোধী জোটের ১২ সদস্য, বিজেপির দুই এবং এক নির্দল সদস্যের সমর্থনে সভাপতি হিসেবে বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ কবিরুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করা হয়। এবং ভোটাভুটিতে তিনি জয়ীও হন। স্থায়ী সমিতির সহকারী সভাপতি হিসাবে জয়ী হন কংগ্রেসের মারিয়ম খান। এর পরেই বিরোধীদের নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করার ‘চক্রান্তের’ বিরুদ্ধে সরব হন জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিধায়ককে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে দল। এ নিয়ে শাওনি বলেন, ‘‘দলের প্রস্তাবিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধী সদস্যদের সঙ্গে একযোগে ভোট দান করা দলবিরোধী কাজের শামিল। জলঙ্গির বিধায়ক, ব্লক সভাপতি এবং এক প্রধানকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে নোটিস দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

এ নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক রাজ্জাক বলেন, ‘‘জেলা সভানেত্রী মুর্শিদাবাদের একাধিক হোটেলে বিরোধীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁর ইন্ধনে আমাকে অপদস্থ করার জন্য দলের যুব সভাপতি উঠে পড়ে লেগেছেন। স্বেচ্ছাচারিতা উনি করছেন। এ সবই আমি রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’

উল্লেখ্য, জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয় ১৫টিতে। সিপিএম এবং কংগ্রেস ৬টি করে আসন পায়। এ ছাড়া বিজেপি ২টি এবং নির্দল প্রার্থী একটি আসনে জয়ী হন। বোর্ড গঠনের আগে থেকেই সভাপতি কে হবেন, তাই নিয়ে তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি এবং জলঙ্গির বিধায়কের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন