পঞ্চায়েত গড়তে হাতে রয়েছে এখনও কিছু সময়। আর সেই সময়টাকেই কাজে লাগাতে চাইছে শাসক দল, এমনই অভিযোগ বিরোদীদের। কপালে ভাঁজ ফেলে তারা বার বার তাই নালিশ জানাচ্ছেন, ‘শুরু হয়ে গেল কেনাবেচার পালা!’
বহরমপুরে যেমন ত্রিশঙ্কু বোর্ডের ভবিষ্যৎ গুনতে সম্প্রতি বৈঠক করল তৃণমূল। দলীয় নেতৃত্ব ও পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী সদস্যদের নিয়ে সেই বৈঠকে ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েতগুলি যাতে দলই বোর্ড গঠন করতে পারে, সে ব্যাপারে ‘কৌশলগত’ অবস্থান নেওয়ার কথা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
দলের মুর্শিদাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারি সে বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন বলে দলের অন্দরের খবর। কিন্তু বেলডাঙা-১ ব্লকের চৈতন্যপুর-২ পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও সেই ‘কৌশল’ কি কাজ করছে? দলের এক তাবড় জেলা নেতা বলছেন, ‘‘মেন হচ্ছে না, তৃণমূল সেখানে বোর্ড গঠনের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছে।’’ সেখানে, আগে থেকে নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতা করে নিয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। ভোটের ফল বের হওয়ার পরেও সেখানে তাদের ঐক্য অটুট রয়েছে এখনও।
চৈতন্যপুর ২ পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৫টি, বিজেপি ৪টি এবং কংগ্রেস ৩টি আসন পেয়েছে। এখন কেন্দ্রে বিজেপি-কংগ্রেসের মধ্যে যতোই বিরোধ থাকুক না কেন, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে ঠেকাতে নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরা বিশেষ করে চৈতন্যপুর ২ পঞ্চায়েতে ভোটের আগে থেকেই নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতা করে প্রার্থী দিয়েছিল।
বিষয়টি অস্বীকার করছেন না বেলডাঙার বিধায়ক কংগ্রেসের মহম্মদ শফিউজ্জামান। তিনি বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত এলাকার নিচুতলার কর্মীরা ভোটের আগে থেকেই আসন সমঝোতা করে ভোটে লড়েছে। তাই জয়ের পরে কংগ্রেস ও বিজেপি এক সঙ্গে বোর্ড গড়বে এমনটাই ঠিক করেছে তারা। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই।’’
বিজেপি’র জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা বোর্ড গড়ব এবং কংগ্রেস আমাদের নিঃশর্ত সমর্থন দেবে, এটাই কথা
হয়ে আছে।’’ ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তে কংগ্রেস ও বিজেপি এককাট্টা থাকায় এখন প্রধান পদ নিজেদের দখলে রাখতে ওই পদে প্রার্থী দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসক দল। বেলডাঙা-১ ব্লক (উত্তর) তৃণমূলের বনতোষ ঘোষ জানান, ওই পঞ্চেয়েতে সর্বোচ্চ আসনে জয়ী হওয়ায় প্রধান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদি কংগ্রেস ও বিজেপি পৃথক ভাবে প্রধান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, তাহলে সর্বোচ্চ আসন থাকায় তৃণমূল প্রধান পদে জয়ী হব। অন্য দিকে মিলেমিশে বোর্ড গড়লে বিজেপি ও কংগ্রেসের আঁতাতের বিষয়টি এলাকার মানুষের কাছে প্রকাশ্যে চলে আসবে। সে ভরসাতেই এখন দিন গুনছে তৃণমূল।
সুতোয় ঝোলা সেই পঞ্চায়েতের আসা না ছাড়লেও তা যে ক্রমেই তাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে তা জানে তৃণমূল। তবুও...।