করিমপুরে কঠিন ঠাঁই, পার করতে অস্ত্র মহুয়া

করিমপুর বললেই একটা বিকেলের কথা মনে পড়ে তাঁর— কোজাগরীর ভরা বিকেল। এনায়াতুল্লা সাহেবের বাড়ির উঠোনে ঘুরে ঘুরে গাইছেন এক বাউল। নদিয়ার সেই করিমপুরেই তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন শুনে এই ছবিটাই ঝপ করে ভেসে উঠেছিল মহুয়া মৈত্রের চোখে। তাঁর কথায়— ‘‘লক্ষ্মীপুজোর বিকেলটাই মনে পড়েছিল সবার আগে।’’ ভোটের ঘাঁটি গাড়তে আজ, সোমবারই সেখানে বাড়ি খুঁজতে আসছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:৪৫
Share:

করিমপুর বললেই একটা বিকেলের কথা মনে পড়ে তাঁর— কোজাগরীর ভরা বিকেল। এনায়াতুল্লা সাহেবের বাড়ির উঠোনে ঘুরে ঘুরে গাইছেন এক বাউল।

Advertisement

নদিয়ার সেই করিমপুরেই তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন শুনে এই ছবিটাই ঝপ করে ভেসে উঠেছিল মহুয়া মৈত্রের চোখে। তাঁর কথায়— ‘‘লক্ষ্মীপুজোর বিকেলটাই মনে পড়েছিল সবার আগে।’’ ভোটের ঘাঁটি গাড়তে আজ, সোমবারই সেখানে বাড়ি খুঁজতে আসছেন তিনি।

শুক্রবার বিকেল থেকেই সীমান্ত-ঘেঁষা শহরটায় ‘দিদি’র ঘর খুঁজতে দলীয় কর্মীদের মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কেউ খোঁজ দিয়েছেন— দু’টো ঘর, এক চিলতে বারান্দা, একতলা বাড়ি। পিছনে একটা ছোট্ট কিচেন গার্ডেন। পছন্দ না হলে, দোতলার দু’কামরার একটা ফ্ল্যাটও খুঁজে রেখেছেন তাঁরা, জানাচ্ছেন স্থানীয় এত তৃণমূল নেতা। আপ্লুত মহুয়া বলছেন, ‘‘করিমপুরের দলীয় কর্মীদের এই আবেগটাই বাড়তি উৎসাহ জোগাচ্ছে।’’

Advertisement

বাড়ি বাছাই আর স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক দফা আলোচনা সেরে এ দিনই অবশ্য ফিরে যাবেন তিনি। পাকাপাকি ভাবে করিমপুর তাঁর ঠিকানা হয়ে উঠবে বৃহস্পতিবার থেকে। মহুয়া বলছেন, ‘‘আপাতত তো এখানেই থাকতে হবে। এখানকার মানুষজনের সঙ্গে পুরনো আলাপটা ফের ঝালিয়ে নিতে হবে না!’’

পুরনো আলাপ?

মহুয়া ফিরে যাচ্ছেন পাক্কা আট বছর আগে। রাহুল গাঁধীর ‘আম আদমি কা সিপাহি’ হয়ে যখন এ রাজ্যে পা রেখেছিলেন তিনি। গ্রাম বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণে আনাচ-কানাচ ঢের ঘুরেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য জেলা ঘুরলেও নদিয়ায় একটু বেশিই সময় দিয়েছিলাম। আসলে, কৃষ্ণনগরের লাগোয়া আমঘাটায় তো আমাদের আদি বাড়ি।’’

রাজনীতির সেই ‘আদিপর্বে’র পরে ২০১০ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েও এ জেলার আনাচকানাচ বহু বার ঘুরে গিয়েছেন মহুয়া। তাঁর এক পুরনো সহযোদ্ধা, ‘আম আদমি’র এক কর্মী ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘দল বদলে গিয়েছে, কিন্তু মহুয়া বদলেছেন বলে মনে হয় না। সেই সময়ে দেখেছি, মহিলা খাটতে পারেন বটে। আর, তেমনই একগুঁয়ে। কোনও কিছুর শেষ না দেখে ছাড়েন না।’’

এর পরেও বলবেন করিমপুরের প্রার্থী বহিরাগত? প্রশ্নটা তুলছেন দলেরই নদিয়া জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। তাঁর মতে, ‘‘প্রার্থী নিয়ে দলের একনিষ্ঠ কর্মীরা কিন্তু কেউ মুখ খোলেননি। যাঁরা খুলেছেন, পাড়া-পড়শিও তাঁদের তৃণমূল কর্মী হিসেবে চেনেন না।’’

বিগত কয়েকটি নির্বাচনের অঙ্কের নিরিখে নদিয়ার সবচেয়ে শক্ত আসন করিমপুর। সেখানে সাধারণ কোনও প্রার্থীর জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই বুঝেই মহুয়ার মতো ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীকে পাঠিয়েছেন দলনেত্রী। যিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে, দলের সাধারণ সম্পাদক এবং দিল্লিতে দলের মুখপাত্রের দায় সামলেছেন। হিমাচল প্রদেশ থেকে মেঘালয়, চন্দ্রকোনা থেকে তাহেরপুর— ভোট প্রচারেও ঘোরার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর।

জেলা তৃণমূল সভাপতির মতে, ‘‘করিমপুর জিততে মহুয়ার থেকে ভাল প্রার্থী আর হতে পারত না। আমরা সবাই তাঁর সঙ্গে আছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement