গুটখা বিক্রি অবাধেই, কে আর নির্দেশ মানছেন

নির্দেশিকা জারির পর এক মাস প্রশাসনের তরফে কোনও প্রচার চালানো হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

সুস্মিত হালদার 

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০০
Share:

প্রচার আছে, বিক্রিও। প্রশাসনের তামাকবিরোধী প্রচারে ছেদ পড়েনি গুটখা-পানমশলা বিক্রিতে। রবিবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ ও সুদীপ ভট্টাচার্য

গুটখা আর পানমশালার বিক্রি বন্ধের নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ কি আদৌ মানা হচ্ছে? জেলার বিভিন্ন প্রান্তের চিত্র কিন্তু বলছে সরকারি নির্দেশিকা কোনও ভাবেই মানা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, নির্দেশিকা জারির পর এক মাস প্রশাসনের তরফে কোনও প্রচার চালানো হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

খাদ্য সুরক্ষা দফতরের কমিশনার গত ২৫ অক্টোবর সমস্ত ধরনের গুটখা এবং পানমশলা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কোথাও সেই নির্দেশ পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। জেলার সর্বত্র কোনও রাখঢাক না করেই তা প্রকাশ্যে দেদার বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে কোনও অভিযান না হওয়ায় দোকানদাররা কার্যত বুক ফুলিয়ে গুটখা আর পানমশালা বিক্রি করে যাচ্ছেন। এখন শুধুমাত্র কৃষ্ণনগর শহরে মাইকে পানমশলা ও গুটখা বিক্রি না করার বিষয়ে প্রচার শুরু হলেও এত দিন কেন তা করা হয়নি সেই প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি, শহরের বাইরে প্রচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

এক দোকানদার বলেন, “গুটখা বন্ধে জারি কোনও নির্দেশিকার কথা আমার জানা নেই। এখনও পর্যন্ত কেউ তো আমাদের এগুলো বিক্রি বন্ধ করতে বলেনি।” অথচ ৭ নভেম্বর থেকে সর্বত্র গুটখা ও পানমশলা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার কথা ছিল। দোকানদারদের একাংশের দাবি, এত দিন কোনও রকম প্রচার না হওয়ায় নির্দেশিকার ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানতে পারেননি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি দেখার কথা জেলার স্বাস্থ্য দফতরের। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে প্রচার বা অভিযানের বিষয়ে গড়িমসি করা হয়েছে

Advertisement

বলে অভিযোগ।

কিছু দিন আগেও শান্তিপুরের ভাঙা রাসে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে বিক্রি হয়েছে গুটখা ও পানমশালা। কলেজ সংলগ্ন এলাকার এক দোকানদারের কথায়, “কারও কারও মুখে শুনেছি গুটখা, পানমশলা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লোকের মুখে শুনে তো বন্ধ করা যায় না। আদৌ সরকার বন্ধ করতে বলেছে কিনা সেটাও তো দেখতে হবে।” তাঁর বক্তব্য, প্রশাসন থেকে বারণ করলে তিনি আর গুটখা, পানমশলা বিক্রি করবেন না।

কিন্তু কোথাও কোথাও আঙুল উঠেছে দোকানদারদের দিকেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গুটখা ও পানমশালা বিক্রি বন্ধ করতে বলার পর থেকে অনেক দোকানদার তা বন্ধ তো করেনইনি, বরং সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত দাম নিতে শুরু করেছেন। কৃষ্ণনগর শহরেও এমন ঘটনা ঘটছে বলে অনেকের অভিযোগ।

জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (দ্বিতীয়) অসিত দেওয়ান বলেন, “আমরা একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোতে চাইছি। দোকানে অভিযান চালানোর আগে আমরা মানুষকে সচেতন করতে চাইছি।” তিনি জানান, শহরে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। একটা অডিও তৈরি করা হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে জেলার সর্বত্র প্রচার করার পর তাঁরা অভিযানে নামবেন। খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ফুড ইনস্পেক্টরদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হবে। তখন যাঁরা গুটখা, পানমশলা বিক্রি করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন