রহিমা বিবি
রোজার জন্য ভোরে ভাত খেয়ে সবে লেপের মধ্যে পা ঢুকিয়েছি। আচমকা বিকট শব্দ। বুকটা কেঁপে উঠল। খানিক পরে কান্নার আওয়াজ। ঘর থেকে বেরিয়ে বুঝলাম, আওয়াজটা পদ্মার দিক থেকে আসছে। দৌড় দিলাম। গিয়ে দেখি, আমাদেরই জনা কয়েক প্রতিবেশী-আত্মীয় কান্নাকাটি করছেন। এসেছেন বিএসএফের জওয়ানেরাও। তাঁদের সার্চলাইটে দেখলাম, জলে বুদবুদ উঠছে।
পরে জানলাম, আস্ত একটা বাস নদীতে তলিয়ে গিয়েছে! শুনেই মাথা ভোঁ-ভোঁ করতে লাগল। বেলা একটু বাড়তে এলাকার লোকজনই বাড়ি থেকে দড়িদড়া এনে বাসের জানালায় বেঁধে টেনে তোলার চেষ্টা করতে লাগল। জনা দশেক ছাত্র সাঁতরে পদ্মার ও পারে চলে গিয়েছিল। নৌকা গিয়ে তাদের আনে। পোশাক বদলে আগুন জ্বেলে লেপ চাপা দিয়ে তাদের সুস্থ করার চেষ্টা করলাম।
বেলা যত বাড়তে লাগল, লোকের ভিড় বাড়ল। হাজির পুলিশ-প্রশাসন, সংবাদমাধ্যমের লোকজনও। নদিয়া থেকে এসে পড়েছেন নিখোঁজদের আত্মীয়েরা। ডুবুরিদের অপেক্ষা না করে স্থানীয়েরাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জলে। এক-এক করে ঠান্ডা জলে কুঁকড়ে যাওয়া দেহ বের করে আনছেন। পদ্মাপাড় জুড়ে তখন শুধুই হাহাকার। শুধু মৃতদের আত্মীয়েরা নন, কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষও।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী