মুর্শিদাবাদের দুই প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
পর পর দুই প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে হাহাকার মুর্শিদাবাদে। পরিবারের দাবি, রাজ্যে যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তার জেরেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন দু’জন। এক জনের নাম ২০০২ সালের তালিকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্য জনের কাছে ছিল না নিজের জন্মের শংসাপত্র। সেই দুশ্চিন্তা থেকেই হৃদ্রোগ হয়েছে, দাবি পরিবারের সদস্যদের।
মুর্শিদাবাদের নওদা থানার অন্তর্গত ছাতুমারা অঞ্চলের বাসিন্দা ইসরাইল মোল্লা (৬৫)। বেঙ্গালুরুতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন তিনি। সোমবার রাতে আচমকা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন ইসরাইল। বেঙ্গালুরুতেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র আশাদুল মোল্লা জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় বাবার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছিল। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের কারও নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি, এই তথ্য তিনি ফোনে বাবাকে জানিয়েছিলেন। তার পরেই বৃদ্ধ মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন বলে দাবি পরিবারের। রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
আশাদুল বলেন, ‘‘বাবা, কাকা মিলিয়ে আমাদের পরিবারের মোট ১৮ জন সদস্যের নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।’’ ২০০০ সালের বন্যার সময় তাঁরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। সেই কারণে ২০০২ সালের তালিকায় কারও নাম ওঠেনি বলে তাঁদের ধারণা। বুধবার ইসরাইলের দেহ বেঙ্গালুরু থেকে নওদায় এসে পৌঁছেছে। শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
আবার, বুধবার সকালেই মুর্শিদাবাদ পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদপাড়া এলাকার বাসিন্দা জিতেন রায়ের (৫৭) মৃত্যু হয়েছে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর পুত্র জয়দেবের কথায়, ‘‘আমার দাদু-ঠাকুমার পৈতৃক ভিটে ছিল পূর্ববঙ্গের রাজশাহীতে। ওঁরা এখানে চলে আসার পরে আমার বাবার জন্ম হয়। কিন্তু বাবার কাছে জন্মের কোনও শংসাপত্র ছিল না।’’ জিতেনের পরিবারের দাবি, জন্মের শংসাপত্র এসআইআর-এর জন্য জমা দিতেই হবে— এমনটা তিনি লোকমুখে শুনেছিলেন। সেই থেকে তাঁর বাবাও চিন্তায় ছিলেন। নথি সংক্রান্ত জটিলতা এবং দুশ্চিন্তার কারণে জিতেন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি তাঁর পুত্রের।