শুরুই হল না শেষ প্রান্তর

বেওয়ারিশ লাশ কোথায়

সবুজ লেনর পরে নীল-সাদা ডুরে, বাড়িটা যেন হাঁ-মুখ করে অপেক্ষা করছে। যে বাড়ির ছিমছাম সমাহিত চেহারার সঙ্গে কোনও মিলই নেই সেই অপেক্ষার।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

সবুজ লেনর পরে নীল-সাদা ডুরে, বাড়িটা যেন হাঁ-মুখ করে অপেক্ষা করছে। যে বাড়ির ছিমছাম সমাহিত চেহারার সঙ্গে কোনও মিলই নেই সেই অপেক্ষার।

Advertisement

তবু যেন— ‘ছাই নিয়ে পড়ে আছে আঁচ/ স্তব্ধতা যেন আমারই অপেক্ষায়...।’ কে বলবে, সেই অমোঘ অপেক্ষা এক বেওয়ারিশ লাশের।

সাড়ে তিন মাস গড়িয়ে গিয়েছে, ‘শেষ প্রান্তর’ এখনও শুরুই হল না!

Advertisement

যে বাড়ির কথা বলছি, চাকদহের মানুষ তাকে চেনে, বৈদ্যুতিক চুল্লিঘর হিসেবে। ও পারে হালিশহর আর এ দিকে রানাঘাট— মাঝের বিস্তীর্ণ জনপদে তেমন বিদ্যুৎচুল্লিতে শব দাহের ব্যাবস্থা কোথায়?

প্রায় পঁয়তাল্লিশ লক্ষ টাকা খরচ করে ‘শেষ প্রান্তর’ গড়ার পরেও অবশ্য সে চুল্লিতে আঁচ পড়েনি!

কারণ, নিতান্তই একটা বেওয়ারিশ লাশের ঘাটতি। চাকদহ পুরসভার প্রধান দীপক চক্রবর্তীর গলায় আফশোস, ‘‘শ্মশানের একটা চুল্লি চালু করতে গেলে পরীক্ষামূলক ভাবে অন্তত একটা দেহ দাহ তো করতে হবে!’’ আর তা করতে গেলে, ‘‘কেউ তো আর নিজের আত্মীয় পরিজনের দেহ আমাদের হাতে তুলে দেবেন না। পাছে, মেশিন কাজ না করে, ট্রায়াল রানেই যদি বিপত্তি ঘটে। অবস্থাটা বুঝতে পারছেন!’’

চুল্লির মুখে আঁচ দিতে প্রয়োজন ছিল তাই একটা বেওয়ারিশ লাশের। কিন্তু কী বিপত্তি! গত তিন মাস ধরে আশপাশের কোনও হাসপাতালেই অজ্ঞাত পরিচয় কোনও দেহ পড়ে নেই। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল থেকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল— খোঁজ তো কম হয়নি। কিন্তু হদিস দিতে পারেনি কেউই।

আর তাই, আশপাশের পঞ্চায়েতের মাঠ-ময়দান, নদীর খোলেই আটপৌরে শ্মশানে চলছে শবদাহ। দূষণও হচ্ছে দেদার।

তবে, লাশ না মিললে...।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement