শক্তিনগর হাসপাতাল

চার বার শো-কজ, তবু দেরি

ইউএসজি বিভাগের সেই সব চিকিৎসকদের বিলম্বের হেতু জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শোকজের নোটিসও ধরিয়েছেন তাঁদের। তবে, স্বভাবে বদল আনা যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৯
Share:

তাঁরা আসেন তবে, লাইনটা এঁকে বেঁকে দীর্ঘ হওয়ার পরে।

Advertisement

শক্তিনগর হাসপাতালের আলট্রা সোনোগ্রাফির অপেক্ষায় ঠায় বসে থাকা রোগীদের জন্য বরাদ্দ অপরিসর বেঞ্চিটা উপচে পড়ার পরে ব্যাথা-যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া মানুষগুলো যখন উশখুশ শুরু করেন তাঁদের মেলে তার পরে। অভিযোগটা আসছিল মাস কয়েক ধরে।

ইউএসজি বিভাগের সেই সব চিকিৎসকদের বিলম্বের হেতু জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শোকজের নোটিসও ধরিয়েছেন তাঁদের। তবে, স্বভাবে বদল আনা যায়নি। বরং পাল্টা তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন— কে বলেছে সময়েই তো আসি আমরা! বরং শক্তিনগর হাসপাতালে এটাই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালের এক কর্তার যথেষ্ট হতাশা, “কোনও কথাই শুনছেন না ওঁরা। বরং কেমন যেন একটা ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব!”

Advertisement

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ইউএসজি-র জন্য লাইনটা পড়ে সকাল থেকে। সাত-দশ কেউ বা মাস পেরিয়ে সময় পেয়েছেন, সাত সকালে এসে হাজির হয়েছেন বুক-পেট-ফুসফুসের ছবি তুলতে। কিন্তু তাঁদের দেখা নেই! সাধারণ রোগীদের সঙ্গে সেই লাইনে ছটফট করতে থাকা প্রসূতিদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। কিন্তু ইউএসজি ঘরের দরজা যে আর খোলে না। সকাল সাড়ে ন’টায় ইউএসজি শুরু হওয়ার কথা, অথচ ওই বিভাগের তিন চিকিৎসকের তিন জনের কেউই এগারোটার আগে আসেন না। কখনও সেই বিলম্ব বেলা আড়াইটাতেও গড়ায় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু হুঁশ ফেরে না ওই চিকিৎসকদের।

মঙ্গলবার, এই কারণে রোগীর বাড়ির লোকজনের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ওই বিভাগের চিকিৎসক মুকেশ গুপ্ত। রোগীর বাড়ির লোকেদের হাত থেকে তাঁকে বাঁচিয়েছিলেন হাসপাতালের কর্মীরাই। কিন্তু তাতেও শিক্ষা হয়নি। বুধবারও একই ভাবে দেরি করে আসেন শান্তনু মণ্ডল। শুধু তাই নয় তাঁর এই দেরি করে আসাটা যে সাধারণ রুটিন হয়ে গিয়েছে, মেনে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কেন দেরি? শান্তনুবাবু কোনও রকম মন্তব্য করতে চাননি। তবে, হাসপাতালের সুপার শচীনন্দ্রনাথ সরকার বলেছেন, “শুধু দেরি করে আসার জন্যই আমরা শান্তনু মণ্ডলকে চার বার শো-কজ করেছি। কিন্তু তার পরও উনি শোধরাননি।” তাহলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হল না? তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে তার প্রতিটা শো-কজের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শচীন্দ্রনাথবাবুর উত্তর, “না। আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি সব। এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ পাইনি বলে কোনও পদক্ষেপ করতে পারছি না।”

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলছেন, “আমরা তো সুপারকে বলছি ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে।”

এই চাপানউতোরের মাঝে দীর্ঘ হয় শুধু রোগীদের অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন