প্রতীকী চিত্র।
ধর্ষণে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে এসে বিচারকের সামনেই মূল অভিযুক্তের গালে সপাটে থাপ্পড় কষাল নির্যাতিতা কিশোরী।
শনিবার দুপুরে কৃষ্ণনগর পকসো আদালতে ঘটনাটি ঘটে। কৃষ্ণনগর তাঁতিপাড়ার এক টোটো চালকের বাড়িতে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার রাতেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। পুলিশের কাছে অভিযোগে সে জানিয়েছিল, রান্নার কাজ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে গত ৯ অগস্ট তাতে তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা, টোটো চালক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ মোট চার জনের কথা জানতে পেরেছিল।
সেই চার জনের মধ্যে তিন জনকে কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। চতুর্থ জনের খোঁজ এখনও মেলেনি। অভিযোগকারিণী নাবালিকা হওয়ায় ভারতীয় দণ্ডবিধির সঙ্গে পকসো আইনেও মামলা রুজু করা হয়েছে। এ দিন দুপুরে অভিযুক্তদের পকসো আদালতে তোলা হয়। তিন জনকে শনাক্ত করতে হোম থেকে আনা হয়েছিল ওই নাবালিকাকেও।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুরে যখন মামলার শুনানি চলছে, মূল অভিযুক্ত নৃসিংহ ঘোষ ওফে বাপ্পাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেনি বছর ষোলোর ওই কিশোরী। এজলাসের ভিতরেই সে সপাটে চড় কষায় বাপ্পার গালে। তাকে নিরস্ত করা হলেও রাগে ফুঁসতে থাকে নির্যাতিতা মেয়েটি। বিচারক তিন জন ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গত ৯ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে থাকা ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রথমে আলাপ জমায় বাপ্পা। পরে সে মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় তার এক বন্ধু প্রভাস ঘোষ ওরফে লালার। এর পর তারা দু’জন মিলে রান্নার কাজের টোপ দিয়ে কিশোরীকে মোটরবাইকে চড়িয়ে নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ ঘাট পেরিয়ে নিয়ে যায় মায়াপুরের হোটেলে। কিন্তু সেখানকার হোটেল ঘরভাড়া দিতে রাজি না হওয়ায় তারা কৃষ্ণনগরে ফিরে যায়।
কিশোরীর অভিযোগ, বাপ্পাই তাকে নিয়ে যায় তাঁতিপাড়ায় তার বন্ধু প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। ওই বাড়িতেই ছিল শ্যামসুন্দর ঘোষ নামে আর এক অভিযুক্ত। রাতের খাওয়ার পরে বাড়িরই একটি ঘরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
কিশোরী জানিয়েছে, তাকে নিয়ে অভিযুক্তেরা কৃষ্ণনগরের হলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। সেখানেও যৌন হেনস্থা করা হয়। সেই সময়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে থাকা মোবাইল হলের মধ্যে পড়ে যায়। পুলিশ তদন্তে নেমে সে কথা জানতে পেরে সিনেমা হল থেকে উদ্ধার করে মোবাইলটি। সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই নবদ্বীপ থানার পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, শ্যামসুন্দর মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। ইঞ্জিয়ারিং পড়া শেষ করে চাকরির খোঁজে ব্যস্ত প্রভাস ঘোষ ওরফে লালা এখনও ফেরার।