উর্দিতে আটকানো ক্যামেরা। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
কেউ নিয়ম ভাঙল কি না তা দেখার দায়িত্ব তাঁদের। সেই নজরদারির ফাঁক গলে যাওয়ার জো নেই কারও। কিন্তু তাঁরাই যদি নিয়ম ভাঙেন? সেই অভিযোগেরও কমতি নেই। তা হলে তার প্রতিকার করবে কে? সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে প্রযুক্তির উপর ভরসা রাখল জেলা প্রশাসন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে ট্রাফিক পুলিশ কর্মীদের ‘মিনি ভিডিও ক্যাম’ দেওয়া হয়েছে।
আপাতত বহরমপুর ওসি এবং সার্জেন্ট পদ মর্যাদার দুই আধিকারিককে ওই ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। সারাদিনের কাজের পর ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া ভিডিও খুঁটিয়ে দেখা হবে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, তিনি নিজে না ওই ভিডিও দেখতে না পারলে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপারদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে নেবেন। তাঁর দাবি, নিয়মিত নজরদারি চালানো হলে ট্রাফিক পুলিশের কাজে গতি আসবে। স্বচ্ছতা বাড়বে।
পুলিশ সুপার জানান, ট্রাফিক পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে অভিযোগ মেলে। অভিযোগের সত্যতা যাতাই করতে ওই ভিডিও ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। গাড়ি আটকে জরিমানা আদায়ের সময়ে ওই ভিডিও ক্যামেরা অন থাকবে। যাতে বাড়তি জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি খারাপ আচরণ করছেন কিনা, তাও রেকর্ডিং দেখে জানা যাবে। ট্রাফিক পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেপুটি পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) থেকে ওসি এবং সার্জেন্ট পদমর্যাদার অফিসারদের ক্ষমতা রয়েছে মোটর ভেহিক্যালস আইন মেনে জরিমানার রসিদ কেটে দেওয়ার। পরে ওই রসিদ দেখিয়ে জরিমানার অর্থ ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা করা হয়। কিন্তু রসিদ যাঁরা কাটেন তাঁদের বিরুদ্ধে অনেক সময় আইন না মেনে জরিমানা করার অভিযোগ ওঠে। আবার অনেক সময় জরিমানা আদায়ের পরে রসিদ না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় ছাড় পেয়ে যান তাঁরা। এই অবস্থায় কাজে স্বচ্ছতা আনতে ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
ভিডিও ক্যামেরা দেওয়ার ট্রাফিক পুলিশ কর্মীদের একাংশও খুশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মী জানান, আইন মেনে গাড়ি না চালানোর জন্য গাড়ি দাঁড় করানো হলে অনেকে হম্বিতম্বি শুরু করেন। অনেক সময় রাজনৈতিক নেতারা ‘চাকরি খেয়ে নেওয়ার’ হুমকিও দেন। কেউ কেউ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তাদের কাছে মিথ্যে অভিযোগও করেন। এখন সবটাই রেকর্ডিং হওয়ায় কে অশালীন আচরণ করছেন তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।