(বাঁ দিকে) মৃত পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
কথা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো ওড়িশার সম্বলপুরে গণপ্রহারে নিহত পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানার পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। জুয়েলের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি-১ ব্লকের চকবাহাদুরপুর গ্রামে। গত বুধবার সম্বলপুরে দুষ্কৃতীদের হাতে মারধর খেয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন জুয়েল।
দিনকয়েক আগেই সুতি-১ নম্বর ব্লকের জুয়েল-সহ কয়েক জন যুবক রাজমিস্ত্রির কাজে সম্বলপুর গিয়েছিলেন। বুধবার রাতে একটি চায়ের দোকানে বসে নিজেদের মধ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলছিলেন জুয়েল, আরিক ও পলাশেরা। অভিযোগ, সেই সময় পাঁচ জনের একটি দল সেখানে চড়াও হয় এবং তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে গালিগালাজ শুরু করে। শ্রমিকেরা নিজেদের বৈধ পরিচয়পত্র দেখালেও দুষ্কৃতীরা কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। প্রাণের ভয়ে আরিক ও পলাশ পালিয়ে যেতে পারলেও জুয়েলকে ধরে ফেলে উন্মত্ত জনতা। তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গোলমালের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে মর্গে নিয়ে যান।
শুক্রবার সকালে জুয়েলের দেহ গ্রামের বাড়িতে ফিরেছে। ফিরে এসেছেন আরিক-পলাশেরাও। ওড়িশায় বিজেপিশাসিত সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বলাতেই ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ হিসাবে অভিযুক্ত করে জুয়েলকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রামবাসী থেকে পরিবার পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দাবি তুলেছে। এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি ও ওড়িশা সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘‘প্রতিটি বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষদের উপর যে নির্মম অত্যাচার ও নিগ্রহ চলছে, তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার দৃঢ় অবস্থান নেবে।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, মানুষের জীবনের বিনিময়ে কোনও মূল্য হয় না। কিন্তু যে সব ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটছে, সে সব ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সেই মতো জুয়েলের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।