West Bengal Lockdown

অতিথিকে আড়াই মাস আগলে রাখলেন মুকুলরা

দু’কামরা ঘরের মধ্যে একটি ঘরে রেবালালকে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন মুকুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ০৪:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

নওদার কামাদপুরের বাসিন্দা মুকুল শেখ পেশায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি। হুগলির গুড়াপের এক কারখানায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করতেন তিনি। একই কারখানায় গ্রামের আরও প্রায় ত্রিশ জন শ্রমিক কাজ করতেন। ভিন্ রাজ্যের কয়েক জন শ্রমিকও ওই কারখানায় কাজ করতেন। মূলত ইদ পরবের আগেই ঘরে ফেরেন তাঁরা। কিন্তু দেশ জুড়ে লকডাউন জারি হতেই শ্রমিকেরা গাড়ি ভাড়া করে যে যাঁর মতো করে ঘরে ফিরে যান।

Advertisement

কিন্তু একা পড়ে যান মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা রেবালাল পানিকা। মধ্যপ্রদেশের অনুপপুর জেলায় তাঁর বাড়ি। কারখানার সমস্ত শ্রমিকেরা চলে যাওয়ার চেষ্টা করায়, একা পড়ে যান রেবালাল। তা ছাড়া, লকডাউনে বন্ধ হয়ে পড়ে যান চলাচল। তাঁর অসহায়তার কথা মাথায় রেখে নওদার কামাদপুর গ্রামের শ্রমিকেরা রেবালালকে নিয়ে আসেন তাঁদের গ্রামে। কিন্তু অধিকাংশ শ্রমিকের পরিবারেই একজন যুবককে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। ফলে মুকুল শেখ রেবালালকে তাঁর বাড়িতে আশ্রয় দেন।

দু’কামরা ঘরের মধ্যে একটি ঘরে রেবালালকে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন মুকুল। প্রায় আড়াই মাস ধরে ভিন্ রাজ্যের যুবককে অতিথির মতই আপ্যায়ন করছেন মুকুল ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। মুকুলের মা বুলুয়ারা বিবি বলছেন, ‘‘আত্মীয়ের মতোই ছেলেটাকে রেখেছি। রোজার মাসে আমরা সবাই রোজা থাকলেও দিনের বেলায় তাকে রান্না করে খেতে দিয়েছি। আমাদের সাথে একসাথে বসে সেহরি ও ইফতারে খাবার খেয়েছে।’’ মুকুল শেখের পরিবারের সঙ্গে ইদের আনন্দটুকুও ভাগ করে
নিয়েছেন রেবালাল।

Advertisement

ভাঙা ভাঙা বাংলা আর হিন্দি মিশিয়ে বছর ত্রিশের রেবালাল বলেন, ‘‘মা খুব অসুস্থ, ছেলের জন্যও মন খারাপ করছে। কিন্তু বাড়ি ফিরতে পারছি না। এখানে খুব ভাল আছি, নিজের বাড়ির মতো আছি, তবুও বাড়ির জন্য মন খারাপ করছে।’’ ভিডিও কলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement