ধৃত: চারশো রাউন্ড গুলি নিয়ে ধৃত মহিলা। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মহিলাদেরও কাজে লাগাচ্ছে অস্ত্র কারবারিরা। গত বছরের মতো শুক্রবার সন্ধ্যায়ও এক মহিলাসহ দু’জনকে ৪০০ রাউন্ড গুলি সমেত গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার পরেই পুলিশের অনুমান, মহিলাদের কাজে লাগানোর প্রবণতা বেড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল বিহারের মুঙ্গেরে বছর পঁয়তাল্লিশের মহম্মদ হায়দর ও মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার বহড়ানের ত্রিশ বছর বয়সি মানোয়ারা খাতুন। তাঁদের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলছেন, ‘‘পুলিশের চোখকে এড়াতে ওই মহিলাকে ক্যারিয়ার (বাহক) হিসেবে ব্যবহার করছিল অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। কোথায়, কাকে ওই গুলি সরবরাহ করা হত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে মানোয়ার বাবা আগেই মারা গিয়েছেন। তাঁরা দুই বোন, এক ভাই। মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে থাকে অবিবাহিত মানোয়ারা। তিনিও গ্রেফতার হতে অবাক গ্রামের লোকজন। ওই গ্রামের বাসিন্দা নাজেম আলি বলছেন, ‘‘মাঝে মধ্যে গ্রাম থেকে বাইরে যেতেন মানোয়ারা। মনে করতাম, পরিচারিকার কাজে যাচ্ছেন। কিন্তু এভাবে অস্ত্র কারবারে জড়িত হয়ে পড়েছে, তা জানতাম না।’’
তবে মানোয়ারা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা খুবই গরিব। সংসার চালানোর জন্য অস্ত্রের ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। পুলিশের দাবি, মানোয়ারা গত পাঁচ মাসে তিন বার হায়দরের কাছ থেকে ২৫টি অস্ত্র ও ৩০০ রাউন্ড গুলি নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যাতেও গুলি নেওয়ার জন্য মানোয়ারা বহরমপুরে মোহনা বাস টার্মিনাসের সামনে অপেক্ষা করছিল। বাস থেকে নেমে হায়দর বাজার করার একটি ব্যাগ মানোয়ারার হাতে তুলে দিতেই পুলিশের একটি দল তাদের ঘিরে ধরে। ওই গুলি মুঙ্গের থেকে নদিয়ার করিমপুরের মহিষবাথানে এক অস্ত্র কারবারির কাছে পাঠানোর জন্য আসছিল। পুলিশের দাবি, ৪০০ রাউন্ড গুলির দাম আনুমানিক ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। বহরমপুর থেকে করিমপুরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মানোয়ারা পেত ২০ হাজার টাকা।