অ্যাসিড নিয়ে ক্ষুব্ধ মহিলা কমিশন

অ্যাসিড বিক্রি, হামলা ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রশাসনের যে কার্যত কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। নারী নির্যাতন সংক্রান্ত বিষয়ে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাঁসখালি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২০
Share:

অ্যাসিড বিক্রি, হামলা ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রশাসনের যে কার্যত কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। নারী নির্যাতন সংক্রান্ত বিষয়ে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যেরা।

Advertisement

সোমবারই জেলায় এসেছিলেন কমিশনের সদস্যেরা। সে দিন তাঁরা ধুবুলিয়ার রাজাপুরে নিহত ছাত্রীর বাড়িতে যান। ছাত্রীটিকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সে দিনও তাঁরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এর পরে মঙ্গলবার সকালে হাঁসখালির গাজনায় গিয়ে অ্যাসিড হামলায় নিহত ছাত্রী মৌ রজকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় ও অন্যেরা।

মৌয়ের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলার পরে জেলার শিশু সুরক্ষা দফতরের কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কমিশনের সদস্যেরা। গাজনা থেকে ফিরে জেলাশাসক, পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেন তাঁরা। প্রশ্ন তোলেন, শিশু সুরক্ষা দফতরের কর্মীরা কেন হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রীটির সঙ্গে কথা বলেননি? কেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেননি? রাজাপুরের ঘটনায় ধুবুলিয়া থানার ভূমিকা নিয়েও এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুনন্দাদেবীরা। ওই ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সুনন্দাদেবীর মতে, “অসম্পূর্ণ রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। তা কাজে লাগিয়ে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। জেলায় ময়নাতদন্ত করার জন্য কোনও অটোপসি সার্জেন নেই। ফলে শুধু এই ঘটনাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই ময়নাতদন্তে অসম্পূর্ণ রিপোর্ট দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। আমরা বৈঠকেও এই বিষয়টি তুলেছি।” রাজাপুরের ঘটনায় জেলা পুলিশ দ্রুত ফরেন্সিক রিপোর্ট আনাতে উদ্যোগী হচ্ছে না বলেও আক্ষেপ করেছেন তাঁরা।

Advertisement

২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী অ্যাসিড হামলার ক্ষেত্রে তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সরকারের। জেলায় অধিকাংশ অ্যাসিড আক্রান্তই ওই টাকা পাননি। পায়নি মৌয়ের পরিবারও। এমনকী, অ্যাসিড হামলা নিয়ে আইনি কী পদক্ষেপ করার আছে তা নিয়েও পুলিশ-প্রশাসনের কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই বলে অভিযোগ কমিশনের সদস্যদের। সুনন্দাদেবীর মতে, “জেলায় একের পর এক অ্যাসিড হামলা হচ্ছে, অথচ পুলিশ-প্রশাসনের আইন ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। খুব হতাশাজনক।”

হাঁসখালির হামলার ক্ষেত্রে পুলিশ ভাল কাজ করেছে বলে‌ মন্তব্য করেও ধুবুলিয়া নিয়ে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়ে দিয়েছে মহিলা কমিশন। পরে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “বৈঠকে কয়েকটি সমস্যার কথা উঠে এসেছে। আমরা বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন