অভিযোগ: থানায় থেকে বেরিয় আসছেন মৃতের স্ত্রী।— নিজস্ব চিত্র
এক প্রৌঢ় মঙ্গলবার সকালে গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। মৃতের নাম অলোক দত্তরায় (৫৯)। তিনি বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতেন। অভিযোগ, অলোকবাবু গত জানুয়ারি মাসের ভাড়া মেটাতে পারেননি। তখন বাড়ির মালিক বিদ্যুৎ ও জলের লাইন কেটে দেয় বলেও অভিয়োগ। শেষ পর্যন্ত এদিন ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই এদিন সকালে ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখেন তাঁর স্ত্রী ব্রততীদেবী। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বহরমপুর থানার আইসি শৈলেনকুমার বিশ্বাস জানান, ওই প্রৌঢ় একটি সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছেন। তাতে বাড়ির মালিকের স্ত্রী’র বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা থেকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।’’
তবে ঘটনার পরেই পুলিশ বাড়ির মালিক সুশান্ত বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে পরে ছেড়েও দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক ধরে ইন্দ্রপ্রস্থের দোতলা বাড়ির নিচের তলা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও পুত্র-সহ থাকতেন পেশায় মুহুরি অলোকবাবু। ব্রততীদেবী বলেন, ‘‘ইন্দ্রপ্রস্থের অমর চক্রবর্তী রোডে তাঁর শ্বশুর বাড়ি থাকলেও দীর্ঘ দিন ধরেই আমরা বাড়ি ভাড়া করে রয়েছি। আর্থিক কারণে গত জানুয়ারি মাসের ভাড়া দিতে পারিনি। তাই গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ ও জলের লাইন বন্ধ করে দেয় বাড়ির মালিক।’’ তবে আর্থিক কারণে মানসিক অবসাদ থেকেই ওই আত্মহত্যা কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে। সেই সঙ্গে ব্রততীদেবীর আচরণ ও সুইসাইড নোটে অলোকবাবুর হাতের লেখাও মিলিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ। বাড়ির মালিক সুশান্তবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও দুর্ব্যবহার করা হয়নি। এদিন বকেয়া ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার কথাও অলোকবাবু নিজে বলেন। তার পরে তিনি যে এই কাণ্ড করবেন, আমরাও ভাবতে পারিনি। তবে স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্কের বিষয়টিও পুলিশের তদন্ত করে দেখা উচিত।’’