পেটের টানে কখনও ঘরবাড়ি ছেড়ে, কখনও সপরিবারে এসে ওঠেন ইটভাটায়। বছরের অন্তত কয়েক দিনটা কাজের খোঁজে হন্যে হতে হবে না। প্রাপ্তি বলতে এইটুকুই।
কিন্তু কাজের নিরাপত্তা থাকলেও জীবনের নিরাপত্তা আছে তো? কতটা সুরক্ষিত জীবন? তা ছিটেফোঁটা নেই, তা ফের প্রমাণিত হল রবিবার।
রেজিনগরের তকিপুরের মাঠের এক ইটভাটায় প্রতিদিনের মতো কাজ করছিলেন আজমত শেখ (৩০)। পোড়ানোর পর ইট থরে থরে ইট সাজিয়ে রাখা হচ্ছিল। পোড়ানোর জায়গা থেকে আজমত মাথায় ইট চাপিয়ে নিয়ে যেখানে ইট সাজানো হচ্ছিল সেখানে যান। মাথা থেকে ইট ফেলার সময় কোনও ভাবে তা সাজানো ইটের সাজানো দেওয়ালের উপর পড়ে। সেই ধাক্কায় ইটের দেওয়াল ভেঙে যায়। হুড়মুড়িয়ে ইট এসে তাঁর গায়ে উপর পড়ে।
তা দেখে মালেক রুস্তম নামে এক শ্রমিক তাঁকে বাঁচানোর জন্য ছুটে আসেন। ইট পড়ে তাঁর উপরেও। তবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনাস্থলে মারা যান আজমত।
গুরুতর জখম মালেক রুস্তমকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি বুকে ও পায়ে চোট পেয়েছেন।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও মৃতের পরিবার পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে কোনও লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।
ঘটনাটা ইটভাটা চত্বরে হলেও ওই ইটভাটার মালিক ইয়াসিন শেখ তা অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, ওই শ্রমিক তাঁর ইটভাটায় কাজ করলেও ঘটনাটি ওই ইটভাটা চত্বরে ঘটেনি। ইটভাটা লাগোয়ান এলাকায় তা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পায়ে পায়ে জড়িয়ে গিয়ে ওই শ্রমিক পড়ে যান। তাতেই চোট পেয়ে তিনি মারা যান। ইট গায়ে পড়ে মারা যাওয়ার কথাটি মিথ্যে।’’
গ্রামপাড়া ২ পঞ্চায়েতের প্রধান সে শেরধিনা বিবি ঘটনাটি জানতেনই না। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রথম ঘটনাটি জানলাম। এ বার খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’