প্রসূতিকে ভুল রক্ত,কমিশন চাইল রিপোর্ট

গত ২০ অগস্ট জ্বর ও রক্তাল্পতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চাপড়ার এলেমনগরের জেসমিনা মল্লিক। পরের দিন দুপুরে তাঁকে রক্ত দেওয়া শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে প্রসূতির শরীরে ভুল রক্ত দেওয়া এবং ঘটনাচক্রে তার পরেই তাঁর গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। চার সপ্তাহের মধ্যে দফতরের সচিবকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। যদিও এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই বলে দাবি জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের।

Advertisement

গত ২০ অগস্ট জ্বর ও রক্তাল্পতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চাপড়ার এলেমনগরের জেসমিনা মল্লিক। পরের দিন দুপুরে তাঁকে রক্ত দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে স্বামী ইমরান মল্লিক দেখেন, ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে তিনি রক্ত দেওয়া বন্ধ করান। তিনি জানান, দিন কয়েক আগে বাইরে পরীক্ষা করিয়ে তারা জেনেছিলেন, জেসমিনার রক্ত ‘ও পজ়িটিভ’ গ্রুপের। অথচ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে ‘এ পজ়িটিভ’ গ্রুপের রক্ত।

ওই দিনই শক্তিনগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন ইমরান। রাতে জেসমিনার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকলে তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে জেলা সদর হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই রাতেই তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরিবারের লোকেরা দাবি করেন, ভুল রক্ত দেওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে গর্ভস্থ সন্তানের। যদিও বিশেষজ্ঞেরা জানান, ভুল রক্ত দেওয়া এবং শিশুর মৃত্যুর মধ্যে সম্ভবত কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

এর পরে জেসমিনা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। ২৪ অগস্ট তাঁকে সেখানে ভর্তি করে তিন বার ডায়ালিসিস করা হয়। ১২ দিন পর তিনি ছুটি পান। এরই মধ্যে গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের টেকনিশিয়ান সেন্টু মন্ডলের ভুলে ঘটনাটি ঘটেছে। অস্থায়ী কর্মী সেন্টুকে বরখাস্ত করা হয়।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। গোটা বিষয়টি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনরে কাছে লিখিত ভাবে জানায় জেসমিনার পরিবার। শুক্রবার ইমরান বলেন, “কাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল, সেটা বড় কথা নয়। আমরা সর্বোচ্চ লড়াই করার জন্য তৈরি হচ্ছি। এত বড় একটা ক্ষতি কোনও ভাবেই মেনে নেব না।” সেই সঙ্গেই তিনি জানান, জেসমিনা আগের চেয়ে ভাল আছেন। তবে তাঁকে নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে হচ্ছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় অবশ্য বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। ফলে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। সমস্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন