Crime

খুনের পরে হুমকি, ‘নাক গলিয়ো না’

পুলিশের অনুমান, সেই সময়ে রাতের অন্ধকারে তাঁকে গলা টিপে খুন করে পাশের বেগুন খেতে ফেলে দেয় বাবন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০০:১৪
Share:

ভাঙার চেষ্টা হয় আশালতার বাড়ির এই জানলাটি। —নিজস্ব চিত্র

প্রৌঢ়াকে খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি সে, চড়াও হয়েছিল তাঁর তালা-বন্ধ বাড়িতে। শাবল দিয়ে জানলা ভেঙে সে বাড়িতে ঢোকার মুখে পাড়া-পড়শি তাকে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ বাবন চৌধুরী নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, “ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জেরা করা হচ্ছে। শুক্রবার তাকে আদালতে তোলা হবে।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, বহরমপুর থানা এলাকার আঁধারমানিকের ভরাট গ্রামের ওই ঘটনাটি বুধবার রাতের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আশালতা দাস (৬০) নামে ওই মহিলা দিশি মদের কারবার করতেন। সেখানেই যাতায়াতের সূত্রে বাবনের সঙ্গে আশালতার আলাপ। ওই মহিলার পড়শিরা জানান, প্রৌঢ়া তাঁর দশম শ্রেণির পড়ুয়া নাতনিকে নিয়ে একাই থাকতেন। সেই সুযোগ নিয়েই বাবন মাস কয়েক ধরে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে।

শিল্পমন্দির গার্লস স্কুলের ওই ছাত্রী জানায়, ‘‘প্রায়ই আমার পিছু নিত বাবন। নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করত। প্রায়ই রাতে আমাদের বাড়ির চালে ঢিল মারত।’’ বুধবার রাতেও একই কাণ্ড করছিল বাবন। ভয় পেয়ে স্থানীয় কয়েক জনকে ফোন করে নিজের অসহায়তার কথা জানান আশালতা। তার পর, আতঙ্কিত হয়ে নাতনিকে বাড়িতে রেখে দরজায় তালা দিয়ে এক পরিচিতকে খবর দিতে নিজেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন আশালতা।

Advertisement

পুলিশের অনুমান, সেই সময়ে রাতের অন্ধকারে তাঁকে গলা টিপে খুন করে পাশের বেগুন খেতে ফেলে দেয় বাবন। তার পর শাবল দিয়ে তাঁর বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা করে। সেই সময়ে পড়শিরা উঠে পড়েন। ধরে ফেলেন বাবনকে। পুলিশ ডেকে তুলে দেওয়া হয় তাকে।

স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম চৌধুরী বলেন, ‘‘আশালতাদির বাড়ির কাছে এসে দেখি মদ্যপ বাবন তখনও জানলায় শাবল চালিয়ে তা ভাঙার চেষ্টা করছে। আমরা তাকে এমন আচরণের কথা জানতে চাইলে মুখের উপরে জানিয়ে দেয়, ‘নাক গলানোর দরকার নেই!’’

এর পরেই পাড়ার লোকজন তাকে ধরে ফেলতেই তাদের সঙ্গে বচসা জুড়ে দেয় সে। ক্রমশ লোক জমতে থাকলে, বেগতিক বুঝে পালানোর চেষ্টা করে ওই যুবক। সেই সময়ে তাকে ধরে ফেলেন পড়শিরা।

খানিক পরেই খোঁজ পড়ে আশালতার। খোঁজাখুঁজি করতেই বাড়ির অদূরেই খেতের মধ্যে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। খবর যায় পুলিশে। ভোরে পুলিশ এলে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

স্থানীয় ভরাট পঞ্চায়েত সদস্য রাসমণি চৌধুরী বলেন, “ওই এলাকায় ভাড়া থাকতেন আশালতা। বাবন অবশ্য এলাকার পুরনো সমাজবিরোধী। বছর তিনেক আগে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চষ্টার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন