ক্লাস বয়কট করে বিক্ষোভ মেডিক্যালের পড়ুয়াদের

বিভিন্ন দাবিতে ক্লাস বয়কট করে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। মঙ্গলবার ওই অবস্থান-বিক্ষোভে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা সামিল হন। তাঁরা জানান, মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলের বেশ কয়েকটি ঘরে সোমবার গভীর রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যায়। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে জলের পাম্প বিকল হয়ে যাওয়ায় পানীয় জলেরও আকাল দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০০:১২
Share:

তখন বিক্ষোভ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

বিভিন্ন দাবিতে ক্লাস বয়কট করে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা।

Advertisement

মঙ্গলবার ওই অবস্থান-বিক্ষোভে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা সামিল হন। তাঁরা জানান, মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলের বেশ কয়েকটি ঘরে সোমবার গভীর রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যায়। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে জলের পাম্প বিকল হয়ে যাওয়ায় পানীয় জলেরও আকাল দেখা দিয়েছে। পানীয় জল ও বিদ্যুতের দাবিতে এদিন সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের সামনের গেটে অবস্থান করেন ছাত্র-ছাত্রীরা। পরে বিভিন্ন দাবি জানিয়ে তাঁরা স্মারকলিপিও জমা দেন।

অধ্যক্ষ অজয়কুমার রায় বলেন, “হস্টেলের বিদ্যুৎ সংযোগের একটি লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে সোমবার গভীর রাতে হস্টেলের বেশ কয়েকটি ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। রাতে ত্রুটি সারানো সম্ভব হয়নি। এদিন বিষয়টি জানার পরেই বিদ্যুতের মিস্ত্রি নিয়ে এসে তা সারানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই গণ্ডগোল করার ফলেই কয়েকটি ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তবে কারা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা এখনও জানতে পারিনি।”

Advertisement

২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদন পায়। এর পরেই ১০০ জন ছাত্রছাত্রী ওই কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু কোনও পরিকোঠামো ছাড়াই ক্লাস শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের জন্য এখনও পর্যন্ত নতুন হস্টেল তৈরি হয়নি। হাসপাতালের পুরনো নার্সিং হস্টেলের দোতলায় অস্থায়ী হস্টেলে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি নতুন হস্টেল তৈরি হওয়ায় সেখানেও কিছু ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবন নির্মাণের দায়িত্বে ছিল যে ঠিকাদার সংস্থা, এত দিন তারাই হস্টেল দেখভালের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু সময় মতো ভবন নির্মাণ করতে না পারার কারণে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে নতুন ঠিকাদার সংস্থা না আসা পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে রয়েছে হস্টেল।

এদিকে জলের পাম্প বিকল হয়ে যাওয়ায় জলকষ্টও দেখা দিয়েছে। কিছু দিন আগে হস্টেলের শৌচাগারের জলের কল দুষ্কৃতীরা খুলে নিয়ে চলে যায়। শৌচাগারের জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় পড়ুয়াদের। ছাত্রদের কথায়, “২৪ ঘণ্টার জন্য প্রহরী থাকার কথা, তা-ও নেই। এদিকে মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে মদ-গাঁজা-হেরোইনের ঠেক রয়েছে। দুষ্কৃতীরা আমাদের অনুপস্থিতিতে হস্টেলের ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে পালাচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। এমনকী কলেজ চত্বরেই যাতায়াতের পথে ছাত্রীদের বিভিন্ন কটূক্তি শুনতে হচ্ছে।”

অধ্যক্ষ বলেন, “এদিন বিষয়টি জানার পরেই জলের পাম্প সারানোর বন্দোবস্ত হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের কোনও বিষয়ে অসুবিধার মুখে পড়তে না হয়, সে ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ সচেতন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন