কৃষ্ণনগরে ছাত্র খুনে ধৃত মূল অভিযুক্ত

কৃষ্ণনগরে ছাত্র খুনের ঘটনায় অবশেষে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত মিঠুন চক্রবর্তী কৃষ্ণনগরের স্টেশন সংলগ্ন মাল গুদামপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রবিবার রাতে তাকে কৃষ্ণনগরের শরৎপল্লি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ধৃত যুবকই ওই দিন গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ওই ছাত্রের গায়ে লাগে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:০২
Share:

পুলিশের হেফাজতে মিঠুন চক্রবর্তী।—নিজস্ব চিত্র।

কৃষ্ণনগরে ছাত্র খুনের ঘটনায় অবশেষে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত মিঠুন চক্রবর্তী কৃষ্ণনগরের স্টেশন সংলগ্ন মাল গুদামপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রবিবার রাতে তাকে কৃষ্ণনগরের শরৎপল্লি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ধৃত যুবকই ওই দিন গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ওই ছাত্রের গায়ে লাগে।” কিন্ত কেন এবং কাকে লক্ষ্য করে ওই দিন ধৃত মিঠুন গুলি চালিয়েছিল তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই গোটা ঘটনাটি পরিষ্কার হবে।”

Advertisement

গত বুধবার সন্ধ্যায় দাদুর বাৎসরিক শ্রাদ্ধে যোগ দিতে আসার সময় দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারান কৃষ্ণগঞ্জের বাসিন্দা ইন্দ্রনীল রায় (২০)। তিনি কলকাতার গড়িয়া এলাকার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঘটনার পরে মূল অভিযুক্ত ধরা না পরায় প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। যদিও পুলিশ ঘটনার দু’দিন পর বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ওরফে কেলে চিমা নামে এক স্থানীয় দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল অভিযুক্তরা ছিল অধরা।

ঘটনার পর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ইন্দ্রনীলকে খুন করার জন্য সেদিন গুলি চালানো হয়নি। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েই গুলিটি তাঁর গায়ে লাগে। তদন্তে নিতাইয়ের গোষ্ঠীর মিঠুন চক্রবর্ত্তী-সহ বেশ কয়েক জনের নাম উঠে আসে। পুলিশের দাবি, মিঠুন যাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল তার সঙ্গে মিঠুনের ব্যক্তিগত শত্রুতা তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি নিতাইয়ের সঙ্গেও সম্প্রতি একটা দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল মিঠুনের। সেই কারণেই মিঠুন নিতাইয়ের ঘনিষ্ঠ ওই দুষ্কৃতীকে খুন করতে চেয়েছিল।

Advertisement

মূল দুষ্কৃতী ধরা পড়ার খবর শুনে ইন্দ্রনীলের মা ইলোরাদেবী বলেন, “পুলিশ আমার ছেলের খুনিকে ধরেছে। কিন্তু এখানেই যেন সব কিছু থেমে না যায়। আমি চাই আদালত যেন ওই খুনিকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়। কারণ মৃত্যুর আগের মুহূূর্ত পর্যন্ত পুলিশের উপরেই ভরসা করেছিল সে।”

কয়েক মাস ধরেই এলাকার কুখ্যাত সমাজবিরোধী পরিতোষ দত্ত ওরফে পরি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর এলাকা দখল নিয়ে তার দুই শাগরেদ নিতাই ও ব্যাঙার মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। কখনও তার সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা মিশে বেলেডাঙা এলাকায় পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছিল। স্থানীয় মানুষদের দাবি সব জেনেও চুপ করে বসেছিল পুলিশ। গত বুধবার সেই গণ্ডগোলের মধ্যে পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারান মেধাবি ছাত্র ইন্দ্রনীল। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দু’জন দুষ্কৃতীই নিতাই দাসের গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। নিতাই দাস আবার তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। বাকিদের সন্ধানেও তল্লাশি জারি থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন