পুলিশের হাত থেকে রাইফেল ছিনিয়ে লক্ষাধিক টাকার বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন দুই পুলিশকর্মী। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কান্দির গোকর্ণ পাওয়ার স্টেশনে।
পুলিশ ও বিদ্যুত্ বণ্টন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পাওয়ার স্টেশনে ৩৩ একর জমির উপর চারশো কেভি ভোল্ট স্টেশনের কাজ চলছে। ওই কাজ করছে একটি বেসরকারি সংস্থা। রাতে পাওয়ার স্টেশনের গোডাউনে কর্তব্যরত দু’জন পুলিশকর্মী-সহ সংস্থার এক গাড়ি চালককে মারধর করে হাত-পা বেঁধে রাখে দুষ্কৃতীরা। তারপর ওই পাওয়ার স্টেশনের সাত ফুট উঁচু প্রাচীরের উপরে থাকা কাঁটাতার কেটে সাতটি ‘কপার আমর্ড’ আইসোলেটার নিয়ে তারা চম্পট দেয়।
কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের পাশেই ওই পাওয়ার স্টেশন। স্টেশনের সামনের গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী। প্রধান গেট থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে ঠিকাদার সংস্থার দফতর। দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকেছে বুঝতে পেরে ওই পাওয়ার স্টেশনের নিরাপত্তারক্ষীরা শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তারপরেই দষ্কৃৃতীরা চম্পট দেয়। ওই ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই গোকর্ণ পুলিশ ফাঁড়ি ও কান্দি থানা থেকে পুলিশ গিয়ে জখম কৃষ্ণ পাল ও আব্দুল মাতিন নামে দুই কনস্টেবলকে উদ্ধার করে প্রথমে গোকর্ণ গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ দিকে, কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিত্সা চলাকালীন ওই দুই পুলিশকর্মী উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। মঙ্গলবার সকাল ন’টা নাগাদ হাসপাতালের নার্সরা পুরুষ বিভাগে ঢুকে দেখেন ওই দুই পুলিশকর্মী নেই। দুপুর একটা পর্যন্ত তাদের কোনও খোঁজ না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। হাসপাতালের সুপার ভাস্কর বৈষ্ণব বলেন, “জখম ওই দুই পুলিশকর্মীকে খঁুজে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ডায়েরি করতে বাধ্য হয়েছি।” যদিও মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই দুই পুলিশকর্মী সুস্থ আছেন। তাঁরা হাসপাতালে জানিয়েই থানায় ফিরে এসেছেন।”
বারবার এই চুরির ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই পাওয়ার স্টেশনের কর্মীরা। কাজের বরাত পাওয়া বেসরকারি সংস্থার এক আধিকারিক শেখ রবিউল ইসলাম বলেন, “নভেম্বর মাস থেকে এই নিয়ে তিন বার এমন ঘটনা ঘটল। প্রত্যেক বার ওই দামী ‘কপার আর্মড’ আইসোলেটার নিয়ে পালিয়েছে। পুলিশকে জানানোর পরে রাতে পুলিশ পাহারা শুরু হয়েছে। তারপরেও যে ভাবে পুলিশকে মারধর করে এ ভাবে ডাকাতি হচ্ছে তাতে আমরা সত্যিই খুব উদ্বিগ্ন। সব মিলিয়ে বহু টাকার ক্ষতি হয়ে গেল।” গোকর্ণ পাওয়ার স্টেশনের আধিকারিক সুবীর বিশ্বাস বলেন, “পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি।” পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ডাকাতির তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।”