গান শোনার তাগিদে ছেলের মুখ দেখে যাওয়া হল না আসাদুলের। একদিনের তফাতে বাবার মৃত্যু আর ছেলের জন্মের ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে গোটা গ্রাম।
রবিবার থানারপাড়ার গমাখালির কাছে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন আসাদুল শেখ (২৪)। তাঁর বাড়ি থানারপাড়ায়। ওইদিন কানে হেডফোন লাগিয়ে অতি দ্রুত গতিতে তিনি করিমপুর থেকে থানারপাড়ার দিকে আসছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি লছিমনকে সজোরে ধাক্কা মেরে ছিটকে পড়েন রাস্তায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নতিডাঙা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে কলকাতায় রেফার করা হয়। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় আসাদুলের।
সোমবার সকালে কৃষ্ণনগরে ময়নাতদন্ত সেরে মৃতদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছয় সন্ধে ৭ টা নাগাদ। এ দিকে ওই দিনই বিকেল ৪ টে নাগাদ নিজের বাড়িতেই জন্ম হয়েছে আসাদুলের প্রথম সন্তানের। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন মা, ছেলে দু’জনেই ভাল আছে।
কিন্তু ভাল থাকার ফুরসত কই। বাড়িতে মৃতদেহ ঢুকতেই কান্না ভেঙে পড়েন আত্মীয়-স্বজন সকলেই। স্ত্রী ছবিরন বিবি তখনও অচেতন। এক প্রতিবেশী সেলিম শেখ আক্ষেপ করে বলেন, “এমন দিনেই ছেলের জন্ম হল যে তাকে নিয়ে আনন্দ করব, নাকি বাবার জন্য শোক!” অনেকেই আবার বলছেন হয়ত ফিরে এল ঘরের ছেলে।
কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন আসাদুলের বাবা কাদের শেখ। তিনি সামান্য কিছু চাষাবাদ করেন। আসাদুল নিজে কেরলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। ইদ উপলক্ষে দেশের বাড়ি ফিরেছিলেন। তারপর থেকে স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে থেকেই গিয়েছিলেন।
আত্মীয়রা জানিয়েছেন, আসাদুল মোটরবাইক চালাতে অভ্যস্ত নয়। মাসখানেক আগে এই মোটর বাইকটি কিনেছেন তাঁর এক দাদা। তারপর তিনি কাজে চলে গিয়েছেন বাইরে। তারমধ্যেই এই দুর্ঘটনা।