ঘুম ভেঙে গিয়েছে সেই সকালেই

কারও অভ্যাসবশত সাত-সকালেই ঘুম ভেঙেছে। কেউ অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। কারও সময় কেটেছে টিভিতে খবর দেখে। এই ক’দিন কেটেছে ঘরের বাইরে। তাই এ দিন আর ঘর থেকে বেরোতে চাননি কেউই। ভোটের পরের দিন মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিনলিপি ছিল এমনটাই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৪ ০০:২৫
Share:

কারও অভ্যাসবশত সাত-সকালেই ঘুম ভেঙেছে। কেউ অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। কারও সময় কেটেছে টিভিতে খবর দেখে। এই ক’দিন কেটেছে ঘরের বাইরে। তাই এ দিন আর ঘর থেকে বেরোতে চাননি কেউই। ভোটের পরের দিন মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিনলিপি ছিল এমনটাই।

Advertisement

তবে জঙ্গিপুরের তিন প্রধান দলের প্রার্থীরা শুক্রবার নির্বাচনী এলাকা থেকেই চলে গিয়েছেন নিজেদের বাড়ি। তৃণমূল প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলাম শুক্রবার সকালে রওনা দিয়েছেন তাঁর নিজের বাড়ি বারাসতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যবেলা থেকে তিনি অবশ্য বেশ চনমনে ছিলেন। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথাও বলেছেন।

কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় রঘুনাথগঞ্জের দেউলিতে নিজের বাড়িতে সকালটা দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাটিয়ে বিকেলে রওনা দিয়েছেন বীরভূমে। সেখান থেকে চলে যাবেন মিরিটিতে। আর সিপিএম প্রার্থী মুজাফ্ফর হোসেন জঙ্গিপুর ছেড়ে বৃহস্পতিবার রাতেই চলে গিয়েছেন তাঁর বহরমপুরের বাড়িতে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রধান প্রার্থীরা ছিলেন নিজেদের বাড়িতেই। সিপিএমের বদরুদ্দোজা খান বলেন, “গত কয়েক মাস এত কাজ্যে ডুবে ছিলাম যে আজ সকালে উঠে মনে হলআমি আচমকা বেকার হয়ে গেলাম।” ইচ্ছে ছিল সকালে একটু বেলা পর্যন্ত ঘুমানোর। তাও হয়নি। তাঁর কথায়, “আজও ভোর ৫টায় ঘুম ভেঙে গেল। দীর্ঘ সময় ধরে খুঁটিয়ে খবরের কাগজ পড়লাম।”

সকাল ১০টাতেই স্নান-খাওয়া সেরে বেরিয়ে যান লালবাগ কলেজে স্ক্রুটিনির বৈঠকে হাজির হওয়ার জন্য। বদরুদ্দোজাবাবু বলেন, “ভাত ও বাটা মাছের ঝোল খেয়ে বেরিয়ে যাই। দুপুরে লালবাগ কলেজে কমিশনের বৈঠক সেরে চলে যাই বহরমপুরের জেলা পার্টি অফিস। সেখান থেকে বহরমপুরের এবিটিএ কার্যালয় ঘুরে লালবাগের দলীয় কার্যালয়ে এসে আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরে যাই।”

কংগ্রেস প্রার্থী মান্নান হোসেন অবশ্য সকাল ৮টা পর্যন্ত ঘুমিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ভোট প্রচারে বের হওয়ার জন্য গত কয়েক মাস সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠতে হত। ঠিকই করেছিলাম, আজ দেরি করে ঘুম থেকে উঠব।” ঘুম থেকে ওঠার পরেই লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকার কর্মী-সমর্থকরা তাঁর খাগড়াঘাট স্টেশন লাগোয়া বাড়িতে ভিড় করেন। তাঁদের কাছ থেকে খোঁজ-খবর নিতে গিয়েই বেলা গড়িয়ে যায়।

তৃণমূলের মহম্মদ আলি সকাল সাতটায় উঠেছেন। হাত রুটি ও আলু ভাজা খেয়ে ভোট পরবর্তী স্ক্রুটিনির জন্য নথিপত্র প্রস্তুত করে সাড়ে ১০টায় লালবাগ কলেজে যান। দুপুর কেটেছে ফোন ধরতে আর খবর শুনে। তাঁর দুপুরের মেনু ছিল ভাত-বাটা মাছের ঝোল-আলু ভাজা। দুপুরে ঘুম হয়নি।

মান্নানের অবশ্য দুপুরটা কেটেছে ঘুমিয়েই। তিনি বলেন, “ভোট নিয়েই কথাবার্তায় কেটেছে সকালটা। দুপুরে স্নান সেরে নমাজ পড়তে যাই।” বাড়ি ফিরে টক ডাল-ছোট মাছের ঝোল-কাঁঠালের চচ্চড়ি-আমের চাটনি দিয়ে ভাত খেয়ে ফের এক প্রস্থ ঘুম।

মহম্মদ আলি সন্ধ্যায় পাড়ায় ঘুরতে বের হন। রাত পর্যন্ত কেটেছে লালবাগের নিমতলা ঘাট এলাকায়। তাঁর কথায়, “আমার কোনও বিশ্রাম নেই। আগামী ১২ মে বহরমপুর লোকসভা নির্বাচন। দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে ফের কাল থেকে বেরিয়ে পড়ব। তবে এদিন সকাল থেকে সময় কাটতে চাইছিল না। ভোটের জন্য কিছুটা হলেও চাপ ছিল। মনের দিক থেকে হালকা লাগছে। তবে শারীরিক ধকল যাবে কোথায়!”

জঙ্গিপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎবাবু সকালেই ঘুম থেকে উঠে চা, প্রাতরাশ খেয়ে বৈঠকে বসেন দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে। স্ত্রী চিত্রলেখা এ দিনই সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দিল্লি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় রওনা দিয়েছেন গাড়িতে। অভিজিৎবাবু দুপুরে ভাত, ডাল, মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে ভাত ঘুম দেন। তারপর চলে যান বীরভূম।

সিপিএম প্রার্থী মুজাফ্ফর হোসেন সকাল সাড়ে ৫টায় ঘুম থেকে উঠলেও এ দিন একটি বারের জন্যও বাড়ি থেকে বার হননি।

তবে সব প্রার্থীই খুশি শান্তিতে ভোট পর্ব মিটে যাওয়ায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement