ক্ষোভের মুখে পুলিশ। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
এ বার পুলিশ আক্রান্ত বহরমপুরে।
মঙ্গলবার বানজেটিয়া এলাকায় একটি স্কুলের গোলমাল মেটাতে গিয়ে জনতা চড়াও হয় পুলিশকর্মীদের উপরে। ইটের ঘায়ে জখম হন ডিএসপি (সদর) সৌম্যজিৎ বড়ুয়া। এলাকার একটি বাড়িতে ঢুকে দরজায় খিল তুলে দিয়ে প্রাণ বাঁচান তিনি। পাঁচিল টপকে পালাতে গিয়ে এক মহিলা কনস্টেবল জখম হন।
ডিএসপি বলেন, “ওই বাড়িতে ঢুকতে না পারলে হয়তো আমাকে ওরা মেরে ফেলত।” শেষ পর্যন্ত বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স গিয়ে আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই ঘটনায় মোট ৮ জনকে ধরা হয়েছে।”
গত ১১ নভেম্বর বানজেটিয়ার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের মালিক তথা অধ্যক্ষ সুশান্তকুমার দে-র বিরুদ্ধে থানায় যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করে স্কুলের আবাসিক চার ছাত্রী। ঘটনা জানাজানি হতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে স্কুলে দফায়-দফায় বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার পুলিশ সুশান্তবাবুকে ধরে।
সুশান্তবাবুর স্ত্রী তথা পরিচালন সমিতির সদস্য মিঠু দে ও তাঁর ছেলে সোহম দে এ দিন সকালে স্কুলের হস্টেলে যান। অভিযোগকারী দুই ছাত্রী তখন হস্টেলেই ছিল। মিঠুদেবী তাদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। আবাসিক ছাত্রীদের চিৎকার ও কান্নাকাটি শুনে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ওই ছাত্রীদের উদ্ধার করার পরে মিঠুদেবী ও তাঁর ছেলেকে পাল্টা মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ স্কুলে গিয়ে মা-ছেলেকে উদ্ধার করে। এতেই খেপে যায় জনতা। স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। মিঠুদেবীদের গাড়ি রাস্তার পাশে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। আর একটি গাড়ি ও বাসেও ভাঙচুর হয়।
ইটের আঘাতে জখম ডিএসপি সৌম্যজিৎ বড়ুয়া।
খবর পেয়ে ডেপুটি পুলিশ সুপার (সদর) সৌম্যজিৎ বড়ুয়ার নেতৃত্বে পুলিশের দু’টি গাড়ি যায় এলাকায়। পুলিশ সুপারের দাবি, পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি নিয়ে তেড়ে গেলে ‘মার-মার’ আওয়াজ তুলে জনতা পিছু ধাওয়া করে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশকর্মীরা স্কুলের তিন তলায় উঠে কোল্যাপ্সিবল গেট টেনে দেন। দু’জন মহিলা কনস্টেবল স্কুলের পাঁচিল টপকে পালান। তখনই তাঁদের এক জন জখম হন। পুলিশ সুপার বলেন, “ভাঙচুরের ঘটনায় ছ’জন ও ছাত্রীদের মারধরের ঘটনায় মিঠুদেবী ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”