দু’শোরও বেশি রুপোর মুদ্রা মিলল মাটির তলায়

মনিগ্রামে বাড়ি তৈরির জন্য ভিত কাটার সময় পাওয়া গিয়েছিল বিষ্ণু মূর্তি। দু’দিনের মাথায় সুতিতে বাড়ি তৈরির জন্য ভিত খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হল দু’শোরও বেশি রুপোর মুদ্রা। ছাবঘাটির মালোপাড়ায় মহম্মদ ফুরকান আলির বাড়ির পাশে ফাঁকা জমিতে ভিত খোঁড়ার সময় রবিবার দুপুরে মাটির দু’ফুট তলায় বেশ কয়েকটি মুদ্রা শ্রমিকদের নজরে পড়ে। এরপর মাটি ফুট তিনেক কাটতেই বেরোতে থাকে একাধিক ছোট-বড় নানা ধরনের মুদ্রা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০০:৩৬
Share:

উদ্ধার হওয়া মুদ্রা। —নিজস্ব চিত্র।

মনিগ্রামে বাড়ি তৈরির জন্য ভিত কাটার সময় পাওয়া গিয়েছিল বিষ্ণু মূর্তি। দু’দিনের মাথায় সুতিতে বাড়ি তৈরির জন্য ভিত খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হল দু’শোরও বেশি রুপোর মুদ্রা।

Advertisement

ছাবঘাটির মালোপাড়ায় মহম্মদ ফুরকান আলির বাড়ির পাশে ফাঁকা জমিতে ভিত খোঁড়ার সময় রবিবার দুপুরে মাটির দু’ফুট তলায় বেশ কয়েকটি মুদ্রা শ্রমিকদের নজরে পড়ে। এরপর মাটি ফুট তিনেক কাটতেই বেরোতে থাকে একাধিক ছোট-বড় নানা ধরনের মুদ্রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সুতি থানার পুলিশ। রাতভর পুলিশি পাহারা ছিল। সোমবার পুলিশ নিজেই খনন করতে শুরু করে ওই ভিতের মাটি। উদ্ধার হয় আরও কিছু মুদ্রা। সব মিলিয়ে পুলিশ ২০০টি মুদ্রা উদ্ধার করতে পেরেছে।

মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘মুদ্রাগুলি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সবই রুপোর তৈরি। ১৯১২ থেকে ১৯১৬ সালের মুদ্রাগুলিতে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকদের ছবি রয়েছে। সব মুদ্রাগুলিই এক টাকা, আধুলি ও সিকির। আপাতত এগুলি উদ্ধার করে সুতি থানায় রাখা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে জানানো হচ্ছে।”

Advertisement

যেখান থেকে রুপোর মুদ্রা মিলেছে, সেখানে অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই বসতি রয়েছে। যার ভিত খুঁড়ে রুপোর মুদ্রাগুলি পাওয়া গিয়েছে সেই ফুরকান আলির পরিবার নেহাতই গরিব। আধ মাইল দূরে ছাবঘাটি বাজারে তাঁর একটি চায়ের দোকান রয়েছে। পূর্বপুরুষরাও তেমন বিত্তশালী ছিলেন না। ফুরকান আলি তাই বুঝে উঠতে পারছেন না কী ভাবে তাঁর জমিতে মাটির তলায় এত মুদ্রা এল। তিনি বলেন, ‘‘একটা ঘরে হচ্ছে না বলে পাশে পড়ে থাকা জমিতে বাড়ি তৈরির জন্য ভিত খোঁড়া হচ্ছিল। আমি বাড়িতে ছিলাম না। ফুট দু’য়েক খোঁড়া হতেই কয়েকটি মুদ্রা পাওয়া যায়। খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখি সামনে বেশ ভিড়। মুদ্রাগুলো একটা কৌটোয় ভরে রাখি। এরপর ফুট তিনেক মতো মাটি কাটতেই নজরে পড়ে একটা কালো ভাঁড়। কোদালের কোপে ভাঁড়টা ভেঙেই মুদ্রাগুলো ছড়িয়ে পড়েছে মাটিতে। মুদ্রা পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাড়িতে ছুটে আসে পুলিশ। আমার জমিতে পাওয়া গিয়েছে যখন মুদ্রাগুলির মালিক তো আমি। পুলিশ নিয়ে গেল কেন বুঝতে পারছি না।”

সুতিরই মাইল দশেক দূরে আহিরণে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক নির্মাণের সময় গত বছর ৩১ মে উদ্ধার হয়েছিল গুপ্তযুগের বেশ কিছু স্বর্ণমুদ্রা। ফের রুপোর মুদ্রা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজ্যের উপ-প্রত্ন আধিকারিক অমল রায় বলেন, “একশো বছরের প্রাচীন মুদ্রাগুলি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। একসঙ্গে এত মুদ্রা কোথা থেকে, কী ভাবে এল তা দেখতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও রুপোর মুদ্রা পাওয়ার কথা জানানো হয়নি আমাদের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন