প্রহৃত ছাত্রনেতা, কোন্দল তৃণমূলে

ফের প্রকাশ্যে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। গভীর রাতে লাঠিসোটা নিয়ে কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি ও তাঁর বাবা-মায়ের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই জনা কয়েক সমর্থকের উপরে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ধুবুলিয়ার টিবি হাসপাতা‌ল পাড়া এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১৪
Share:

ফের প্রকাশ্যে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

Advertisement

গভীর রাতে লাঠিসোটা নিয়ে কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি ও তাঁর বাবা-মায়ের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই জনা কয়েক সমর্থকের উপরে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ধুবুলিয়ার টিবি হাসপাতা‌ল পাড়া এলাকায়। পরদিন তিনজনের নামে থানায় অভিযোগ জানান ওই সভাপতি শান্তনু দে সরকার। অভিযোগ পত্রে স্পষ্ট লেখা হয়েছে “আক্রমণকারীরা ব্লক সভাপতি তৃণমূলের শিবশঙ্কর দত্ত ওরফে টিঙ্কুর অনুগামী।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এদিন রাতে শান্তনবাবু বাড়িতে খেতে বসেছিলেন। কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে দরজা খোলেন শান্তনুবাবুর মা বছর পঞ্চাশের বুলাদেবী। অভিযোগ, তখনই দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে দেয় দুষ্কৃতীরা। লাঠি, রড, দা, শাবল ও হাঁসুয়াধারী ওই যুবকরা শান্তনুবাবুকে মারতে মারতে বাড়ি সংলগ্ন একটি মাঠে নিয়ে যায়। শুধু শান্তনুবাবুকে পিটিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি। চড়াও হয় তাঁর বাবা-মা’র উপরেও। বুলাদেবী বলেন, “ছেলেকে ওরা মাটিতে ফে‌লে যাচ্ছেতাই ভাবে মারধর করছিল। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও ওরা মারধর করে।” হাতে-পায়ের কালশিটে দেখিয়ে ওই মহিলা বলেন, “দলের লোকজনই আমার ছেলেকে, আমাকে মারল। আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গা‌লাগা‌লও করল।” ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে রেহাই পাননি শান্তনুবাবুর বাবা জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কর্মী দিলীপবাবুও। হাম‌লাকারীরা তাঁকে রড দিয়ে মারে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। অচৈতন্য অবস্থায় মাঠ থেকে শান্তনুবাবুকে উদ্ধার করে ধুবুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

ব্লক রাজনীতিতে শিবশঙ্কর দত্তর বিপরীত মেরুতে অবস্থান শান্তনুবাবুর। তিনি ছাত্র রাজনীতি নিয়ে থাকেন দলের অন্যান্য কাজকর্মে নাক গলান না। সাত বছর ধরে শান্তনুবাবু কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের টিএমসিপি-র সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। মাস ছ’য়েক ধরেই শিবশঙ্কর দত্ত চাইছিলেন তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দিতে। শান্তনু দের অভিযোগ, “বেশ কয়েক দিন ধরেই শিবশঙ্করের লোকজন আমাকে শাসিয়ে আসছিল। রাস্তাঘাটে দেখা হলেই নানা ভাবে হুমকি দিত। পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিত।” শান্তনু দে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জে‌লা সভাপতি অয়ন দত্তর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। বেশ কয়েক মাস আগে সংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে বদ‌ল এলেও শান্তনুবাবু থেকে যান স্বপদেই। এই ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ অয়ন দত্তর বক্তব্য, “শান্তনু আমাদের ভাল সংগঠক। শুনেছি শিবশঙ্কর দত্তর ছেলেরা ওঁকে মেরেছে। বিষয়টি জেলার মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসকে জানিয়েছি।” এ প্রসঙ্গে শিবশঙ্কর দত্ত বলেন, “এলাকার অনেকের মতোই অভিযুক্তরাও আমার অনুগামী। কিন্তু এই মারামারির ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন