পাশেই কীর্তন, ব্যাঘাত পড়ায়

ক্লাস ঘরের জানলা থেকে মাত্র তিন হাত দূরে তারস্বরে বাজছে মাইক। আর তারই মধ্যে সামনে বই-খাতা খুলে ‘পড়াপড়া খেলা’ চলছে স্কুলে। অসহায় শিক্ষকরা দরজা-জানলা বন্ধ করে দিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখার অপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁদের কথা পৌঁছচ্ছে না ছাত্র-ছাত্রীদের কান পর্যন্ত। প্রত্যন্ত গ্রাম নয়, নদিয়ার জেলাসদর কৃষ্ণনগরের ঘূর্নী হালদার পাড়ার প্রাথমিক স্কুলে বুধবার সকাল থেকে লাটে উঠেছে পড়াশোনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০০:৪২
Share:

ক্লাস ঘরের জানলা থেকে মাত্র তিন হাত দূরে তারস্বরে বাজছে মাইক। আর তারই মধ্যে সামনে বই-খাতা খুলে ‘পড়াপড়া খেলা’ চলছে স্কুলে। অসহায় শিক্ষকরা দরজা-জানলা বন্ধ করে দিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখার অপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁদের কথা পৌঁছচ্ছে না ছাত্র-ছাত্রীদের কান পর্যন্ত। প্রত্যন্ত গ্রাম নয়, নদিয়ার জেলাসদর কৃষ্ণনগরের ঘূর্নী হালদার পাড়ার প্রাথমিক স্কুলে বুধবার সকাল থেকে লাটে উঠেছে পড়াশোনা।

Advertisement

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ঝর্না মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ওই অনুষ্ঠান করারা জন্য উদ্যোক্তাদের তরফে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা অনুমতি দিইনি। তারপরও এই অনুষ্ঠান হবে জানতে পেরে আমি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। আর কী করব?” নাম সংকীর্তনের অনুষ্ঠান চলবে টানা পাঁচ দিন। স্কুলের পঠন-পাঠন শিকেয় তুলে এভাবে কীর্তন অনুষ্ঠান চালানোর মধ্যে অবশ্য কোনও অন্যায় দেখছেন না উদ্যোক্তারা। এই কীর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঘূর্নী হালদার পাড়া বারোয়ারি। ৩১ বছর ধরে চলছে এই কীর্তনের আসর। বারোয়ারির সভাপতি দীপক হালদার বলেন, ‘‘প্রতি বছর আমরা এই সময়ে একটি নির্দিষ্ট তিথি মেনে নাম-সংকীর্তনের অনুষ্ঠান করি। কিন্তু সেই সময় স্কুলে গরমের ছুটি চলে বলে সমস্যা হয় না। এবার গরমের ছুটি আগে পড়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়ে গিয়েছে। শিল্পীদের বায়না দেওয়াও হয়ে গিয়েছিল।’’ আর এক উদ্যোক্তা, ওই স্কুলেরই প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুশীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘পঠন-পাঠনের হয়তো কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু তার জন্য কীর্তন বন্ধ করে দেওয়া যায় না। এটা মানুষের ধর্মীয় আবেগ। সেটাকেও সম্মান জানাতে হবে। আমরা স্কুলকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম যে গরমের ছুটি পাঁচ দিন কম নিয়ে এখন ছুটি দিতে। কিন্তু স্কুল সেটা করেনি।’’

এ দিকে, বিষয়টি জানার পরেই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডেকে পাঠান জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অর্চনা ঘোষ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের দোষ নেই। কারণ তারা অনুমতি দেয়নি। বারোয়ারির মন্দির ও স্কুলের মধ্যে পাঁচিল না থাকার কারণে সমস্যা আরও বেড়েছে। ওই নাম সংকীর্তনের আসর যাতে বন্ধ করে স্কুলের স্বাভাবিক পঠন-পাঠন শুরু করে দেওয়া যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন