ঘটনার এক বছর অতিক্রান্ত। তবু শেষ হল না সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন খোরজুনায় ধর্ষণ কাণ্ডে মৃতার পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
সোমবার খোরজুনা কাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হল। এলাকাবাসীরা গ্রামে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ তুলে এলাকায় একটি প্রতিবাদী মিছিল বের করেন। মিছিলে সামিল হন ওই মহিলার স্বামী, বছর দশেকের মেয়ে এবং সাত বছরের ছেলে। ২০১৩ সালের ২৩ জুন বড়ঞা থানার খোরজুনা গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা খুন হন। বাড়ির অদূরে গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত আবাসনে ওই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার ও প্রতিবেশীরা দাবি করেন, ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। প্রতিবাদে শুরু হয় আন্দোলনও। চাপের মুখে ওই দিনই জেলা পুলিশের সুপার হুমায়ূন কবীর গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। প্রকাশ দাস নামে প্রতিবেশী এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত প্রকাশ বিচারাধীন বন্দি।
সোমবার মৃত ওই মহিলার বাড়িতে বাৎসরিক পারলৌকিক ক্রিয়ার আয়োজন করা হয়। কেটে গিয়েছে এক বছর হয়ে। এখনও শুকোয়নি ছেলেমেয়ের চোখের জল। মৃতার নাবালিকা মেয়ে বলে, “আমার মাকে যে খুন করেছে তার যেন কড়া শাস্তি হয় এটাই ঠাকুরের কাছে বলি।” প্রতিবেশী নন্দ কিশোর মন্ডল ও বাবু মন্ডলরা বলেন, ঘটনার এক বছর হয়ে গেলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তেমন কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সরকার ইচ্ছা করলে ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহন পর্ব মিটিয়ে ফেলতে পারত। কিন্তু অভিযুক্তকে আড়াল করার জন্যই সরকার এখনও চেষ্টা করছে। তবে যতদিন না শাস্তি হচ্ছে গ্রামবাসি লড়াই চালিয়ে যাবে।
এদিন অবশ্য প্রতিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে এলাকায় কোনও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়নি। প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি বামা চরণ সেন বলেন, “২৭ জুন এলাকায় একটি প্রতিবাদ সভা করা হবে। কান্দি শহরের বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণ জানান হয়েছে। সে দিন ঠিক হবে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি।” তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার যে ওই ঘটনায় উদাসীন সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, না হলে এতদিন লাগে না শুধু সাক্ষ্য নিতে।” এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনার ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি রয়েছে। কান্দি মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পর্ব চলছে।