বহরমপুরে গ্রেফতার প্রতারণা চক্রের পাণ্ডা

বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতারণা চক্রের এক পাণ্ডাকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ। শনিবার সকালে তাঁকে আটক করে নিয়ে আসা হয় আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানে দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রবিবার পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশকে ধৃত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন তাঁর নাম শশাঙ্ক পাল। তিনি কলকাতার বাসিন্দা। তবে পুলিশ এখনও ধৃতের নাম-ঠিকানা নিয়ে একশো ভাগ নিশ্চিত নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৪ ০১:১৯
Share:

ধৃত শশাঙ্ক পাল।—নিজস্ব চিত্র।

বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতারণা চক্রের এক পাণ্ডাকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ। শনিবার সকালে তাঁকে আটক করে নিয়ে আসা হয় আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানে দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রবিবার পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশকে ধৃত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন তাঁর নাম শশাঙ্ক পাল। তিনি কলকাতার বাসিন্দা। তবে পুলিশ এখনও ধৃতের নাম-ঠিকানা নিয়ে একশো ভাগ নিশ্চিত নয়। পুলিশ জানতে পেরেছে, কখনও শঙ্কর পাল, কখনও স্বপন পাল নামে নিজেকে এক ভুয়ো অডিট সংস্থার মালিক বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফোন করে টাকা আদায় করতেন ধৃত ওই ব্যক্তি ও তাঁর এক সঙ্গী।

Advertisement

সুতির বহুতালি হাই স্কুলেও ধৃত ওই ব্যক্তি একই কায়দায় ফোন করেছিলেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সজল দাস জানান, এই মাসের গোড়াতেই হঠাৎ এক অডিট সংস্থার তরফে ফোন আসে। ৬ বছরের অডিটের জন্য ৬০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষও তাতে রাজি হয়ে যায়। ধৃত ওই ব্যক্তি ১৪ জুলাই রঘুনাথগঞ্জ শহরের এক হোটেলে দু’জনের জন্য একটি ঘর ভাড়া করতে বলেন। ওই দিন স্কুলের যাবতীয় খাতাপত্র নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই হোটেলে হাজিরও হন। অডিটের পর তাঁদের ২০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়। বাকি ৪০ হাজার টাকা শনিবার সকালে বহরমপুরে গিয়ে মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল।

ইতিমধ্যে বহরমপুরে জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে খোঁজ নিতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক জানতে পারেন যে, স্কুলগুলিতে অডিট করার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলার যে ক’টি সংস্থাকে জেলা শিক্ষা দফতর থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাতে বি কে চ্যাটার্জি অ্যান্ড কোম্পানি নামে কোনো সংস্থার নামই নেই। প্রধান শিক্ষক এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে ধৃত ওই ব্যক্তি প্রধান শিক্ষককে জানান যে, জেলা শিক্ষা দফতর নয়, তাঁরা অডিটের অনুমতি পেয়েছেন রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে। প্রধান শিক্ষক বৃহস্পতিবার কলকাতায় গিয়ে জানতে পারেন ওই নামে কোনও সংস্থাকে অডিটের অনুমতি রাজ্য শিক্ষা দফতরও দেয়নি। এরপরেই সজলবাবু বুঝতে পারেন যে তাঁরা প্রতারণা চক্রের পাল্লায় পড়ে গিয়েছেন। শুক্রবার স্কুল কর্তৃপক্ষ সমস্ত ঘটনা লিখিত ভাবে শিক্ষা দফতরকে জানান। রাতে সুতির আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়েও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। শনিবার সকালে বহুতালি স্কুলের দুই শিক্ষকের সঙ্গে পুলিশও বহরমপুরে যায়। শিক্ষকদের দেখেই টাকা নিতে এগিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি। তখনই পুলিশ তাঁকে হাতেনাতে ধরে।

Advertisement

পুলিশ জানতে পেরেছে, ভরতপুরের বৈদ্যপুর হাই স্কুলেও অডিটের নামে ধৃত ওই ব্যক্তি ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন। শনিবার ওই স্কুলের অডিট হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো ওই স্কুল কতৃর্পক্ষ বহরমপুরে একটি হোটেলও বুক করেন। বৈদ্যপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “একই কায়দায় আমাদেরও ফোন করেন ওই ব্যক্তি। পরে স্কুল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি।” জেলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ পাল বলেন, “অডিটের নামে প্রতারণার এই চক্রটি অনেক স্কুলেই ফোন করে অডিটের নামে মোটা টাকা দাবি করেছে। শুক্রবার বিষয়টি জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পর শনিবার একজন ধরা পড়েছে। সমস্ত স্কুলকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন