ভুয়ো সিম কার্ড বিক্রির চক্রে গ্রেফতার ব্যবসায়ী

ভুয়ো নথিপত্র দিয়ে মোবাইলের সিম কার্ড বিক্রি করার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শান্তিপুরের বেড়পাড়া এলাকার ওই ব্যক্তির নাম সঞ্জয় বিশ্বাস। শনিবার দুপুরে তাঁর দোকানে হানা দিয়ে পুলিশ প্রায় পাঁচশোটি ‘প্রি-অ্যাকটিভ’ সিম কার্ড, নানা লোকের পাসপোর্ট ছবি, ভোটার কার্ডের জেরক্স, স্ট্যাম্প এবং বেশ কিছু ফর্ম উদ্ধার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৮
Share:

ভুয়ো নথিপত্র দিয়ে মোবাইলের সিম কার্ড বিক্রি করার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

শান্তিপুরের বেড়পাড়া এলাকার ওই ব্যক্তির নাম সঞ্জয় বিশ্বাস। শনিবার দুপুরে তাঁর দোকানে হানা দিয়ে পুলিশ প্রায় পাঁচশোটি ‘প্রি-অ্যাকটিভ’ সিম কার্ড, নানা লোকের পাসপোর্ট ছবি, ভোটার কার্ডের জেরক্স, স্ট্যাম্প এবং বেশ কিছু ফর্ম উদ্ধার করে। সঞ্জয় বিশ্বাসকে আটক করে শান্তিপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ব্যক্তির সঙ্গে কোনও বড় অপরাধ চক্রের যোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রবিবার তাঁকে রানাঘাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

নদিয়ার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘গোপন সূত্রে খবর পেয়েই আমরা ওই দোকানে হানা দিয়েছিলাম। ওই ব্যক্তি ভুয়ো নথি জমা দিয়ে একটি বহুজাতিক সংস্থার মোবাইলের সিম কার্ড প্রি-অ্যাকটিভ করে রাখতেন। তারপর কোনও রকম বৈধ নথিপত্র ছাড়াই তিনি এই সিমকার্ডগুলি বিক্রি করতেন।’’

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত ওই ব্যক্তি একটি বহুজাতিক মোবাইল সংস্থার অ্যাসোশিয়েট ডিস্ট্রিবিউটর হিসাবে কাজ করতেন। পুলিশকে জেরায় ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ওই বহুজাতিক সংস্থাটির প্রতি মাসে সিম কার্ড বিক্রির একটা লক্ষ্যমাত্রা থাকে। সেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার জন্যই তিনি ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করে সিম কার্ড ‘প্রি-অ্যাকটিভ’ করতেন। তাঁর এই দাবির কতটুকু সত্যি, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেবগ্রাম, বেথুয়াডহরি, পলাশি ও বারাসত এলাকার বেশ কিছু নথিপত্রও ওই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ কর্তাদের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বড়-বড় অপরাধের তদন্ত করতে গিয়ে এই মোবাইল ফোনের সিম কার্ডের জন্য হোঁচট খেতে হয়েছে। মোবাইলের সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছে যিনি সিম কার্ডটি ব্যবহার করছেন, তাঁর নামে সিম কার্ড তোলা হয়নি। যাঁর নামে নথিপত্র জমা দিয়ে সিম কার্ড তোলা হয়েছে তিনি কিছুই জানেন না। অনেক সময় সেই নিরপরাধ মানুষটিকে যেমন হয়রান হতে হয়েছে, তেমনই পুলিশের তদন্তও হোঁচট খেয়েছে। তদন্তে বিলম্ব হয়েছে। আর তারই ফাঁকে প্রকৃত অপরাধী নিরাপদ জায়গায় সরে পড়তে পেরেছে।

বারবার একই অভিজ্ঞতা হওয়ায় সম্প্রতি নড়ে-চড়ে বসেন জেলার পুলিশ কর্তারা। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সম্প্রতি হাঁসখালিতে একটি শিশু খুনের তদন্তে নেমে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ঘটনার দিন যে ফোন নম্বর থেকে শিশুটির জেঠুকে ফোন করা হয়েছিল সেই নম্বরের সূত্র ধরে তদন্তে নেমে দেখা যায় এক নিরপরাধ ব্যক্তির নামে সিমকার্ডটি তোলা হয়েছে।” বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় শক্ত হাতে এই অপরাধচক্রের মোকাবিলায় নেমেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন