চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে মাঠেই। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
ঘরের ছেলে ঘরে এলেও মাঠ ভরল না শান্তিপুরে। কাঠফাটা রোদে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরি করে মিঠুন চক্রবর্তীর হেলিকপ্টার যখন নদিয়ার শান্তিপুরের স্টেডিয়াম মাঠে নামল, তখন পিছন ভিড়টা পাতলা হয়ে এসেছে। প্রচণ্ড গরমেই এমনটা হয়তো। গরমে ‘মিঠুনদা’র জন্য অপেক্ষা করতে-করতে তিন শিশু-সহ প্রায় ২০ জন অসুস্থ হয়ে পড়লেন মাঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত মাঠে আসেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। মঞ্চের পাশে তারা একের শুশ্রুষা করতে থাকেন। এ সব দেখে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যান মঞ্চে বসে থাকা তৃণমূল নেতারা। মিঠুনের বাছা-বাছা ‘ডায়লগে’ যতই হাততালি পড়ুক, মাঠ না ভরার ভ্রুকুটিটা মুছল না দিনের শেষে। কারণ চাকদহে অন্য সভাটিতেও মাঠ ভরেনি পুরোপুরি।
নদিয়ার কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট কেন্দ্রের পাশাপাশি শান্তিপুর ও চাকদহে বিধানসভার উপনির্বাচন ১২ মে। সেই উপলক্ষে ভোটের প্রচারে এ দিন চাকদহ ও শান্তিপুরে সভা করতে আসেন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। শান্তিপুরে দুপুর একটা নাগাদ মিঠুনের আসার কথা ছিল। মঞ্চের সামনে বসার জন্য বেলা ১২টা থেকে মাঠে ভিড় করতে থাকেন শিশু থেকে বৃদ্ধ নির্বিশেষ সমস্ত স্তরের লোকজন। সময় যত বাড়তে থাকে ততই চড়তে থাকে রোদ। অপেক্ষা করতে করতে রোদের জন্য মাঠ ছেড়ে চলে যান অনেকে। মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছেন তৃণমূল নেতারা। যা শুনে ফোকলা দাঁতে একগাল হেসে গড়ের বাসিন্দা ৭২ বছরের সন্ধ্যারানি সাহা বলেন, ‘‘শুনেছি অনেক বড় নায়ক। তাই দেখতে এসেছিলাম নাতনির হাত ধরে। কিন্তু ও যে আমার এলাকার ছেলে জানতাম না তো।’’ বস্তুত তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য নন, চিত্রতারকা মিঠুনকে দেখতেই ভিড়টা ছিল এদিনের।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে আমাদের বিরুদ্ধে বিরোধীদলগুলির মূল বক্তব্য সারদা নিয়ে। অথচ, পশ্চিমবঙ্গে ৯১টি চিট-ফান্ড আছে। অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। নিয়ন্ত্রণ করে রিজার্ভ ব্যঙ্ক, সেবি ও ইডির মতো সংস্থা। সবই কেন্দ্রের। তা হলে যে চিট-ফান্ডের অনুমোদন দেয় কেন্দ্র, নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্র, সেখানে তৃণমূল দায়ী হবে কেন? ৯১টি চিট-ফান্ডের মধ্যে একটাও তৃণমূলের আমলে তৈরি হয়নি।’’ সোনিয়া গাঁধী, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন মুকুল। পাশাপাশি তিনি সিপিএমকে আক্রমণ করে এ দিন বলেন, ‘‘সারদার টাকায় ওদের পার্টি আফিস চলেছে।’’